বৃহস্পতিবার বিকেলে জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে লাইনচ্যুত হয় বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের ১২টি কামরা। দুর্ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসে ভয়াবহ ছবি। প্রথমটাই অনেকে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। শীতের বিকেলে ফাঁকা জায়গায় ঝুপ করে অন্ধকার নামে। অন্ধকারে দূর থেকে ঘটনাস্থল দেখে রীতিমত চমকে গিয়েছিলেন মানুষ। যদিও ঘটনার পর থেকেই সেখানে সাহায্যে ঝাপিয়ে পড়েন এলাকার মানুষ।
ঘটনার পর ইঞ্জিনের পরবর্তী ১২টি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৭টির অবস্থা ভয়াবহ। একটির ওপর একটি উঠে গিয়েছে, কোনওটা লাইনের অনেকটা দূরে গিয়ে উল্টে পড়েছে। রাতে গ্যাস কাটার দিয়ে দুমড়ে যাওয়া বগি কেটে উদ্ধার কাজ চলে। বিভিন্ন দিক থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় অ্যাম্বুলেন্স। ময়নাগুড়ি, জলপাইগুড়ি এবং সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় অনেককেই উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে পাঠানো হয়।
এদিকে সামাজিক মাধ্যমে তখন সাহায্যের স্বতঃস্ফূর্ত আবেদন ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন দিক থেকে জারি করা হল হেল্পলাইন। রক্তের অভাবে যেন মরতে না হয় কাউকে। তাতে সাড়া দিয়ে প্রচুর মানুষ ছুটে গেলেন হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। রক্ত দিতে মানুষের ভিড় চোখে পড়ল। সামাজিক মাধ্যমে ছবিও ভেসে উঠল। প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন নেটাগরিকেরা। তাদের কথায়, মানবিকতার নিদর্শন রাখল উত্তরবঙ্গের মানুষ।
ময়নাগুড়িতে রেল দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা, গুরুতর জখম হলে ১ লক্ষ এবং সামান্য আহতদের ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেবে কেন্দ্র। একথা জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। দুর্ঘটনার পর বেশকিছু ট্রেনের রুট বদল করা হয়। ঘুরিয়ে দেওয়া হয় বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের যাত্রা পথ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এলাকা পরিদর্শনের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোভিড নিয়ে বৈঠকে থাকাকালীনই দুর্ঘটনার খবর পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে টুইটে তিনি জানান, রাজ্যের পক্ষ থেকে সবরকম সাহায্য করা হবে। আহতদের চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ময়নাগুড়ি বিএড কলেজে রাতে থাকার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন।