পঞ্চায়েত ভোটে ফাটাপুকুরের ৬টি গ্রামের এক ইস্যু, ‘রাস্তা চাই’

রাজগঞ্জ: দীর্ঘ সাত বছর ধরে ফাটাপুকুরের সঙ্গে ৬টি গ্রামের সংযোগকারী একমাত্র রাস্তাটির অবস্থা শোচনীয়। প্রায় দেড় কিমি ওই রাস্তা দিয়েই সারদামনি হাইস্কুলে যাতায়াত করতে হয় পড়ুয়াদের। দুটো বিধানসভা নির্বাচন পেরিয়ে গেলেও মেরামত হয়নি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি। রাজগঞ্জের পানিকাউরি অঞ্চলের ফাটাপুকুর স্কুলপাড়ায় এবারের পঞ্চায়েত ভোটের প্রধান ইস্যু ওই রাস্তার সংস্কার। 

জাতীয় সড়কের পাশেই ফাটাপুকুর সারদামণি হাইস্কুল সংলগ্ন স্কুলপাড়া, ডাঙ্গাপাড়া, আশ্রমপাড়া সহ কয়েকটি গ্রাম রয়েছে। ফাটাপুকুর বাসস্ট্যান্ড বা বাজার থেকে ওই গ্রামে ঢোকার একমাত্র রাস্তাটি দুদিকে প্রায় ২.৫ কিমি বিস্তৃত। ফাটাপুকুরের একমাত্র হাইস্কুল, একটি প্রাইমারি স্কুলের কয়েক হাজার পড়ুয়া এবং এলাকার বাসিন্দারা ওই রাস্তার ওপর দিয়ে নিত্য যাতায়াত করেন। হাইরোডের বাইপাস হিসাবে টোটো, ছোট-বড় গাড়ি হামেসাই চলছে। গরম পড়তে না পড়তেই রাস্তাটি ধুলো তৈরির কারখানায় পরিণত হয়েছে। বর্ষা হলেই খানা-খন্দ জলে ভরে অস্থায়ী পুকুরে পরিণত হয়। রাস্তা ভেঙে গিয়ে কঙ্কাল বেড়িয়ে এসেছে। কোনওকালে পিচ ঢালা হয়েছিল কি না তাও বোঝার উপায় নেই। 

স্থানীয়রা জানালেন, ২০১৩ সালে শেষবার রাস্তাটির কাজ হয়েছিল। তবে দু’বছরের মধ্যেই রাস্তার পিচ উঠে এসেছে। এখন সেই বেহাল রাস্তার সমস্যা বেশ কয়েক বছর ধরেই ভুগতে হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দা পিঙ্কু রায়, কবি চৌধুরী জানান, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগেও গ্রামের অনেকেই লিখিত দাবি জানিয়েছিলেন; আশ্বাস মিলেছিল, তবে পড়ে আর কোনও কাজ হয়নি। ওই রাস্তার ব্যাপারে এলাকার পঞ্চায়েত-প্রধানকে জানিয়েও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ মেনে নিয়ে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যা দয়ামনি বর্মণ বলেন, গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে একাধিকবার এই রাস্তা নিয়ে প্রশাসনের কাছে আর্জি রাখা হয়েছিল। তবে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আবারও জানাব। তিনি আরও বলেন, আমিও এই গ্রামের বাসিন্দা। রাস্তার কাজ হলে গ্রামবাসীদের উপকার হবে।

ফাটাপুকুর সারদামণি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ডঃ সুমন্ত বাগচী বলেন, ‘বেহাল রাস্তার কারণে পড়ুয়া, তাঁদের অভিভাবকদের ভুগতে হচ্ছে। আলগা পাথরে ছন্নছাড়া ওই রাস্তা। বর্ষায় আবার খানাখন্দ জলে ভরে যায়। ছাত্রছাত্রীরা তার ওপর দিয়েই সাইকেল ঠেলে, টোটোয় চেপে আসেন। যেকোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। রাস্তাটি অবিলম্বে মেরামত করা উচিৎ।’ এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা তথা প্রাক্তন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আলোক পাল বলেন, বাম আমলে ওই রাস্তার কাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল। তারপর উদ্বাস্তু উন্নয়ন দপ্তরের উদ্যোগে ২০১৩ সালে রাস্তার কাজ হয়। সংস্কারের অভাবে রাস্তায় কাজের চিহ্নও এখন আর নেই। প্রায় ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও সেই রাস্তা মেরামতের উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। এই ব্যাপারে পানিকাউরি অঞ্চলের প্রধান আলপ রায় বলেন, উদ্বাস্তু উন্নয়ন দপ্তরের উদ্যোগে রাস্তার কাজ হয়েছিল। ওপরে বলে রাস্তা মেরামতের চেষ্টা চলছে। 

About The Author