সীমান্তে প্রচার: বাংলাদেশী ভোট ভিক্ষা? প্রশ্ন BJP-র! সাধারণ জ্ঞান নেই? পাল্টা তৃণমূল প্রার্থীর

কোচবিহার: বাংলাদেশ লাগোয়া সীমান্ত এলাকায় প্রচারে বেরিয়েছিলেন শীতলকুচির তৃণমূল প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায়। সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন তিনি। তাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে কাঁটাতাঁরের ওপারের মানুষগুলির সাথে কথা বলছেন পার্থপ্রতিম রায়। সঙ্গে আবার তৃণমূলের প্রতীকও তুলে ধরা হয়েছে। ছবি পাবলিক হতেই খোঁচা খান বিজেপি-র তরফে। বাংলাদেশিদের কাছে ভোটভিক্ষার অভিযোগ তুলে সরব হয় বিজেপির আইটি সেল।যানিয়ে আলাদা করে পোষ্ট করেন বিজেপির অনুপম হাজরা।

মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ লাগোয়া তেঁতুলের ছড়া সীমান্ত এলাকায় প্রচারে যান শীতলকুচির তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী তথা কোচবিহারে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়। মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ সারার পর তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। পার্থপ্রতিম লিখেছিলেন, ‘আজ তেঁতুলের ছড়া সীমান্তে কাঁটাতারের ওপারের মানুষদের সাথে কথা বললাম ও ভোট প্রার্থনা করলাম।’ এরপরই শুরু হয় বিতর্ক। বাংলাদেশিদের কাছে ভোটভিক্ষার অভিযোগ তুলে সরব হয় বিজেপির আইটি সেল।

পোস্ট ভাইরাল করা হয় বিজেপি আইটি সেলের তরফে। এরপর অনুপম হাজরা ফেসবুকে পার্থপ্রতিমকে খোঁচা দিয়ে লেখেন, ভারতীয় বা পশ্চিমবঙ্গবাসীর ভোটের প্রতি আস্থা হারিয়ে বাংলাদেশের কাছেও ভোট প্রার্থনা তৃণমূলের শীতলকুচি বিধানসভার প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায়ের। পাল্টা দিতে দেরি করেননি পার্থপ্রতিম রায়। তিনি অনুপমের উদ্দেশে পাল্টা লেখেন, বিজেপি হয়ে গেলেই যে সাধারণ জ্ঞান কমে যায় তা বিজেপি নেতা প্রাক্তন সাংসদ অধ্যাপক অনুপম হাজরার এই পোস্ট আবার প্রমাণ করল। ড. অনুপম হাজরা হয়তো জানেই না শীতলকুচি বিধানসভার কয়েক হাজার ভোটার সীমান্তের কাঁটাতারের ওপারেই থাকেন। আরও জানিয়ে রাখি কাঁটাতারের বেড়ার ভেতরে ১০০ মিটার ভারতের অংশ। সেখানকার জমি, বাড়ি, মানুষজন ভারতীয় ও ভারতের।

এখানেই শেষ নয়, বিজেপি-র আইটি সেলকে আক্রমণ করে পার্থপ্রতিম লেখেন, বিজেপি-র আইটি সেলের মূর্খদের উদ্দেশে বলি, সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে ১০০ মিটার জমি ভারতের। বহু ভারতীয় সেখানে বসবাস করেন। তাঁরা আমাদের মতোই ভারতীয় ও ভোটার। শুধু নির্দিষ্ট সময় কাঁটাতারের গেট খুললে তাঁরা এপারে আসেন ও যান। সীমান্ত ও কাঁটাতারের বেড়া সম্পর্কে যাঁদের জানা নেই তাঁরাই অবান্তর মন্তব্য করছেন। তিনি অনুপমকে কটাক্ষ করে আরও লেখেন, অনুপমবাবু আপনার আমন্ত্রণ রইল কোচবিহারে আসুন। আপনাকে কাঁটাতারের ওপারে নিয়ে গিয়ে সেখানে বসবাসকারী রাজবংশী-সহ ভারতীয় মানুষজনের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেব।

তাঁরা দুজনেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ। একজন এখন কোচবিহারে তৃণমূলের জেলা সভাপতি। অপরজন বিজেপিতে যোগ দিয়ে লোকসভা ভোটে হেরে গিয়ে বর্তমানে কেন্দ্রীয় নেতা। দুজনেই সক্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর সেখানেই আজ দুজনের মধ্যে জোর লড়াই। শেষে অনুপম হাজরার সাধারণ জ্ঞান কমে যাওয়ার কথা বলে তাঁকে আমন্ত্রণ জানালেন পার্থপ্রতিম। উল্লেখ্য, ২০১১ সাল থেকে এই আসনটি তৃণমূলের দখলেই। সেবার বিজেপি তিনে ছিল। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে নির্বাচিত কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক সিতাই ও শীতলকুচি বিধানসভা ক্ষেত্রে পিছিয়েই ছিলেন। তবে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে এই দুটি আসনকে টার্গেট করেছে বিজেপি।