জলপাইগুড়ি: রাজগঞ্জের একই এলাকাতে দু’টি দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দুই কিশোরীর মৃত্যু হয়েছিল। নাম জড়িয়েছিল শাসকদলের প্রতিনিধিদের। এইনিয়ে রাজ্য রাজনীতি সরগরম ছিল একটা সময়ে। তবে, নির্বাচনের প্রাক্কালে এই ঘটনাগুলি যেন প্রচারের আড়ালে চলে গিয়েছে। শনিবার রাজগঞ্জে সংযুক্ত মোর্চার সভায় বাম সংগঠনের মহিলা জেলা সমিতির সেক্রেটারি রিনা সরকার এ প্রসঙ্গে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী কি একাই ‘বাংলার মেয়ে’? রাজ্যজুড়ে যে সকল নারীদের উপর হেনস্থা হচ্ছে; রাজগঞ্জের কিশোরীরা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, তারা কি ‘বাংলার মেয়ে’ ছিলেন না?
বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বাম-কংগ্রেস এবং আইএসএফ-এর সংযুক্ত মোর্চার জনসমর্থন বাড়াতে অঞ্চলভিত্তিক কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হল রাজগঞ্জের সন্ন্যাসীকাটায়। শনিবার বিকেলে এই সভায় ছিলেন বামফ্রন্টের জেলা সেক্রেটারি সলিল আচার্য, এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক মহেন্দ্র কুমার রায়, জেলা কমিটির সদস্য মোক্তার হোসেন, অঞ্চল কমিটির সদস্য সৌকত আলি, মহিলা সমিতির জেলা সেক্রেটারি রিনা সরকার প্রমুখ। পাশাপাশি, ওই এলাকায় প্রচার সারলেন সিপিএম প্রার্থী রতন কুমার রায়।
পেট্রোপণ্য সহ দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে এবং শিক্ষা-কৃষি ও কর্মসংস্থান সমস্যার সুরাহা করতে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে সংযুক্ত মোর্চা নির্বাচনী প্রচার করবে। জোটের প্রতি মানুষের সমর্থন বাড়াতে এদিনের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হল। মহেন্দ্র কুমার রায় বলেন, বিজেপি এবং তৃণমূল সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে, শিক্ষাব্যবস্থার অবনতি, বেকারত্ব সমস্যার বৃদ্ধি ও কৃষকদের জন্য অনুপোযোগী আইন প্রণয়ন করেছে সরকার। সাধারণ মানুষকে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’, তৃণমূলের এই স্লোগানকে নিয়ে রিনা সরকার বলেন, রাজগঞ্জের যে মেয়েগুলি ধর্ষণের শিকার হয়েছিল, তারা কি বাংলার মেয়ে ছিলেন না? বাংলায় প্রতিটি মেয়ের সুরক্ষার বিষয়ে অবহেলা করেছে রাজ্য সরকার। সংযুক্ত মোর্চা ক্ষমতায় ফিরলে এই বিষয়ে অবশ্যই গুরুত্ব দেওয়া হবে।
‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ নয়া এই পোস্টারকে সামনে রেখে প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের অভিযোগ, মহিলাদের সম্মান দিতে জানে না বিজেপি, মহিলাদের বরাবরই অবহেলার চোখে দেখে। এমনকি ‘জয় শ্রীরাম’ বলার সময়েও সীতার উল্লেখ করে না। সেই মহিলা-আবেগের ‘তৃণমূলী নাটক’কে বিধল সিপিএমও। তাদের কথায়, কামদুনি থেকে পার্কস্ট্রিট, ‘নির্যাতিতারা কি বাংলার মেয়ে নন?’ রাজগঞ্জের ধর্ষণকাণ্ডে বারবার শাসক দলের প্রতিনিধিদের নাম জড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেন রিনা সরকার। তিনি আরও বলেন, রাজগঞ্জের ধর্ষণকাণ্ডে যুক্ত দোষীরা শাস্তি পাবে কবে?