রাজগঞ্জ: ডিজে বাজিয়ে বিজয় মিছিল না করে এলাকা স্যানিটাইজ করে ভোট জয়ের আনন্দ তথা বিজয় উৎসব উদযাপন করল স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ বিধানসভায় জয়লাভ করেছে তৃণমূল প্রার্থী খগেশ্বর রায়। তিনি প্রায় ১৫ হাজার ৭৭৩টি ভোটে জয়লাভ করেছেন। শুধু তাই নয়, দলের টিকিটে পরপর চারবার জিতেছেন তিনি। সেই খুশিতে বিজয় মিছিল না করে, নিজেদের এলাকায় স্যানিটাইজেশনের কাজ করলেন রাজগঞ্জ বিধানসভার বাবুপাড়া এলাকার তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা।
উদ্যোক্তাদের মধ্যে অরিন্দম ব্যানার্জি, বিশ্বজিৎ দেবনাথ, নরেন ছেত্রী, সুধীর অধিকারী সহ বুথের অন্যান্য তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা রয়েছেন। অরিন্দম ব্যানার্জি বলেন, ‘রাজ্যের ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরই ইচ্ছে থাকলেও নেত্রীর কথা মাথায় রেখে এই করোনা পরিস্থিতিতে কোনও বিজয় মিছিলের আয়োজন করা হয়নি। ভোট জয়ের আনন্দ উদযাপন করা হল সামাজিক কাজের মাধ্যমে। বিগত বছরেও ওই এলাকায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব স্যানিটাইজেশনের কাজ করেছে। এবার এই কাজ করেই বিজয় মিছিলের আনন্দ উদযাপন করলাম আমরা।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গোটা রাজ্যে অসাধারণ ফল করায় উচ্ছ্বসিত তৃণমূল দলের কর্মী সমর্থকেরা। কোভিড প্রোটোকল থাকা সত্ত্বেও আবেগ ধরে রাখতে না পেরে বিভিন্ন জায়গায় বিজয় মিছিল করতে দেখা যায়। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বারংবার অনুরোধ করেছেন যাতে কোনোভাবেই এই পরিস্থিতিতে বিজয় মিছিল বের না করা হয়। সেই কথা মেনেই এমন উদ্যোগ বাবুপাড়া তৃণমূল কংগ্রেসের। যদিও উত্তরবঙ্গে ফল আশানুরুপ না হওয়ায় কিছুটা মনখারাপ, তবে রাজগঞ্জ বিধানসভা এবং গোটা রাজ্যে সবুজ খেলায় খুশি সকলেই।
উত্তরবঙ্গের আটটি জেলার ফলাফল:
কোচবিহার ৯ ৷ তৃণমূল ২ ৷ বিজেপি ৭
আলিপুরদুয়ার ৫ ৷ তৃণমূল ০ ৷ বিজেপি ৫
জলপাইগুড়ি ৭ ৷ তৃণমূল ২ ৷ বিজেপি ৫
দার্জিলিং ৫ ৷ তৃণমূল ০ ৷ বিজেপি ৫
উত্তর দিনাজপুর ৯ ৷ তৃণমূল ৭ ৷ বিজেপি ২
দক্ষিন দিনাজপুর ৬ ৷ তৃণমূল ৩ ৷ বিজেপি ৩
মালদা ১২ ৷ তৃণমূল ৮ ৷ বিজেপি ৪
কালিম্পং ১ ৷ অন্যান্য ১
এদিকে, ভোটের ফল ঘোষণার পরই রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল রাজগঞ্জ বিধানসভা। তৃণমূলের বিজয় মিছিল চলাকালীন হামলার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। তৃণমূলের দু’জন কর্মীকে মেরে তাঁদের একজনের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আরেকজনের হাতে আঘাত লেগেছে। সোমবার কুকুরজান অঞ্চলে হরিপাল কলোনিতে তৃণমূলের বিজয় মিছিল চলাকালিন দলের দুই কর্মীর ওপর এ হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয়রা অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় দলীয় সমর্থকেরাই। যদিও কোভিড প্রোটোকল থাকা সত্ত্বেও কিভাবে বিজয় মিছিল করা হয় সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসা প্রসঙ্গে নিজেদের দলীয় কর্মীদের সাবধান এবং শান্ত থাকার বার্তা দিয়েছেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি।