ডুরান্ড কাপে মহামেডানের হয়ে মাঠে নেমেছে ঘরের ছেলে। খেলার শুরুতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হ্যান্ডশেক, পরে জয়ের আনন্দ। ‘কলকাতায় ছেলের কীর্তি দেখে গর্বে যেন বুকটা ভরে গেল’, এমনটাই জানাচ্ছে রাজগঞ্জবাসী।
ডুরান্ডের ১৩০ তম ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচেই ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্সকে ৪-১ গোলে হারাল মহামেডান। ওই দলের হয়ে যুবভারতীর মাঠে নামেন জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জের ছেলে মনোজ মহম্মদ। উদ্বোধনী মুহূর্তে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের মতই মনোজের সঙ্গেও হাত মিলিয়ে অভিবাদন জানান তিনি। এই দৃশ্য সামনে আসতেই আবেগে ভাসল মনোজের শুভাকাঙ্খিরা।
২০১০ সালে রাজগঞ্জ মহেন্দ্রনাথ হাইস্কুলে ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় ইস্টবেঙ্গল রাজগঞ্জ ওয়েলফেয়ার ফুটবল একাডেমিতে সুযোগ পায় মনোজ। ২০১৬ সালে ভালো পারফরম্যান্সের জন্য কলকাতায় ট্রায়ালের সুযোগ আসে। এরপর ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে ডার্বিতে মোহনবাগানকে হারায় ইস্টবেঙ্গল। লাল হলুদের হয়ে অন্যতম ভূমিকায় উঠে আসে মনোজের নাম। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ডুরান্ডের শুরুটাও যেন নতুন আশা তৈরি করেছে আবারও।
রবিবার ডুরান্ড কাপ টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হাত মেলানোর সুযোগ পেল ঘরের ছেলে। এই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে গর্বে ভাসলেন রাজগঞ্জবাসী। পাশাপাশি সাদা কালো জার্সিতে মনোজের দল ৪-১ গোলে হারিয়েছে প্রতিপক্ষকে। স্বাভাবিকভাবেই মনোজদের সাফল্যে ফের আপ্লুত এলাকার মানুষজন।
এদিন আবার শিক্ষক দিবসও ছিল, খেলার মাঠে নামার আগে মনোজের ফুটবলের গুরু তথা শিক্ষক প্রয়াত উত্তম চক্রবর্তী স্যারকে স্মরণ করেছে। মনোজ জানাল, সকলের শুভেচ্ছায় এদিনও সাফল্য এসেছে। রাজগঞ্জের সকলের কাছেই আশীর্বাদ-দোয়া কামনা করেছে মনোজ।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা অরিন্দম ব্যানার্জি জানান, রাজগঞ্জের ছেলে হিসেবে তার কৃতিত্ব এবং গতকালের ঘটনা সত্যিই গর্বের বিষয়। রাজগঞ্জে বসে মুহূর্তগুলির সাক্ষী থেকেছেন মনোজের পরিবারও। মনোজের মা মঞ্জু বেগম জানান, ছেলের সাফল্যে আমরা সকলেই খুশি। ছেলের জন্য সকলের কাছে শুভেচ্ছা কামনা করেছেন তিনি। রাজগঞ্জ বাজারের ভেতরেই মনোজের বাড়ি। তাছাড়া মনোজের বাবা জামাল মহম্মদ একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। সেই দিক থেকে রাজগঞ্জের ব্যবসায়ীরাও মনোজের সাফল্যে যথেষ্ট খুশি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রবিবার থেকে শুরু হল ডুরান্ড কাপ। এবারে ১৩০ তম ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩রা অক্টোবর রবিবার। তবে এবার এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়নি ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান।