দাবি পূরণ না হওয়ায় ভোট বয়কটের ডাক, রেলের দোষ দেখছেন খগেশ্বর রায়

রাজগঞ্জ: রেলগেটের দাবি পূরণ না হওয়ায় নির্বাচনের দোরগোড়ায় ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত নিল রাজগঞ্জ বিধানসভার দেমধা পাড়ার ১৮/২৩৫ বুথের প্রায় ১২০০ ভোটার। ঘটনাটি ঘটেছে, বেলাকোবা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজগঞ্জ বিধানসভার দেমধা পাড়াতে। দেমধা পাড়া থেকে চ্যাওড়া পাড়া (রানীনগর) চার কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার উপর রয়েছে রেললাইন। লাইন সংলগ্ন পাঁচটি গ্রাম দেমধা পাড়া, ভোমারি পাড়া, চ্যাওড়াপাড়া, নেতাজি পাড়া ভাটিয়াপাড়ার পাঁচ হাজারের অধিক গ্রামবাসী রেল লাইন বসানোর সময় থেকে এই রাস্তা দিয়ে রানী নগর রেলস্টেশন, বিএসএফ ক্যাম্প, শেওড়াপাড়া ও রানী নগর বাজার, দু’টি হাই স্কুল, তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পোস্ট অফিস ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাফ প্রমুখ সংস্থায় কর্মস্থলে পঠন পাঠনে নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার করতে যান।

যেদিন থেকে রেললাইন বসেছে সেই থেকে এই রাস্তা দিয়ে রেললাইন পারাপার করে এলাকার মানুষ দৈনন্দিন জীবন যাপন করতেন। প্রায় দেড় মাস হয় ওই রাস্তার উপরে রেল লাইনের দুই ধারে জেসিপি দিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ গর্ত খনন করাতে সম্পূর্ণ এলাকার মানুষ যোগাযোগ পরিষেবা থেকে বিচ্ছিন্ন। সেইসাথে রেললাইনের উপর দিয়ে পারাপার করলে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে নোটিশ টাঙ্গিয়েছে। এর ফলে মোহিতনগর অথবা বেলাকোপা হয়ে উক্ত এলাকার স্থানগুলিতে সাত কিলোমিটার অতিরিক্ত ঘুর পথে যেতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের।

দুই দিকে রাস্তা খনন করে দেওয়াতে গর্তে পড়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে মানুষ এবং গৃহপালিত পশুর বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসীরা। ২০০৫ সাল থেকে রেল উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে গেটের দাবিতে গ্রামবাসীরা চিঠি যেমন করেছেন অপরদিকে জন প্রতিনিধিদের গোচরে এনেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সমস্যার সমাধান না হওয়াতে আজ বৃহস্পতিবার গ্রামবাসীরা প্রাক পাকুর মাঠে একত্রিত হয়ে মাইক বাজিয়ে মিটিং করে রেলগেটের দাবিতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। ভুক্তভোগী গ্রামবাসী মানিক রায় রীতা রায় প্রণতি রায়দের বক্তব্য রেলগেট ছাড়া ভোট নেই।

রেলগেট না হওয়া পর্যন্ত ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গ্রামবাসীরা। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কমলিনী সরকার বলেন রেল কর্তৃপক্ষ রেললাইনের উভয় দিকে গর্ত করে দেওয়াতে এলাকাবাসী সোজা পথে যেতে পারছে না স্কুলে বাজার ঘাট কর্মস্থলে পোস্ট অফিসে প্রচন্ড অসুবিধার মধ্যে তিনি নিজেও ভুক্তভোগী বলে জানান। গ্রামবাসীরা সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গ্রামবাসীরা লিখিত ভাবে তাকে সমস্যার কথা জানালে সেই চিঠির ভিত্তিতে রেল উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে সরকারি পদ্ধতিতে সমস্যার সমাধানে যোগাযোগ করবেন বলে জানান।

রাজগঞ্জ বিধানসভা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী খগেশ্বর রায় বলেন রেলের হঠকারী সিদ্ধান্তে পাঁচ হাজারে উর্দ্ধে গ্রামবাসীরা যোগাযোগ পরিষেবা থেকে সংকটের মুখে । গর্তে পড়ে নিত্য দুর্ঘটনা ঘটছে। গ্রামবাসীদের রেলগেটের দাবি যুক্তিযুক্ত ভোটের পরেই তিনি রেল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করবেন বলে জানান সেইসাথে বলেন অবিলম্বে রেল কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। গ্রামবাসীদের ভোট বয়কটের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি সত্তর তাদের সাথে যোগাযোগ করবেন বলে জানান।

স্থানীয় বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, নির্বাচন বিধি-নিষেধ উঠে গেলে তিনি সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেবেন। এক্ষেত্রে রাণীনগর স্টেশন মাস্টার মধু মঙ্গল সরকার বলেন, ব্যস্ততম এই রেল লাইন। রেললাইনের উপর দিয়ে চলাচল করা বেআইনি। এই লাইনের উপর দিয়ে দূরপাল্লার দ্রুতগামী রেল চলাচল করে, দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা। রেল গেটের বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীরা তার মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দিলে তিনি যথাযথ স্থানে পৌঁছে দেবেন।