প্রেম করে বিয়ে, আড়াই বছর নির্যাতনের পর স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা!

জলপাইগুড়ি: প্রেম করে বিয়ে। বিয়ের পর থেকেই বধূ নির্যাতনের অভিযোগ স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘরে আটকে রেখে স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা। থানায় জানাতেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে অভিযুক্তরা। রাজগঞ্জের পানিকাউরি অঞ্চলে ফকিরঢিপ এলাকার ঘটনা। জানা গিয়েছে, ভালোবেসে বিয়ে করার পর তিন মাস কাটতে না কাটতেই স্ত্রীর উপর নারকীয় নির্যাতন শুরু করে অভিযুক্ত স্বামী। ওই ব্যক্তি পরে মেয়ের বাপের বাড়ি থেকে বড় অংকের টাকা দাবি করে। টাকা পেয়েও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। ছোট্ট শিশু কন্যার ওপরেও নির্যাতন করেছে তার বাবা। গত ১৭ মার্চ, বিয়ের আড়াই বছর পর গৃহবধূকে প্রাণে মারার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় মেয়ের বাড়ির লোকজন। এরপর রাজগঞ্জ থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। এই মুহূর্তে অভিযুক্তেরা প্রত্যেকেই বাড়িছাড়া। অভিযুক্তদের চরম শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ওই গৃহবধূ ও তার পরিবার।

রাজগঞ্জ ব্লকের পানিকৌরি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বেলাকোবার নতুনপাড়ায় এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য। নিপীড়িতা গৃহবধূ ঝর্ণা রায়ের অভিযোগ, আড়াই বছর আগে একই গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন পাড়া নিবাসী আদিত্য রঞ্জন রায়ের সাথে নিজেদের পছন্দমতে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তিন মাস অবধি সব ঠিকঠাকই ছিল। এরপর থেকেই স্বামী আদিত্য রঞ্জন রায় ও শাশুড়ি অনিমা রায় তার উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু করে। চাপ দিয়ে বাবা সন্তোষ রায়ের থেকে ৫০ হাজার টাকা আদায় করে তার স্বামী। বাপের বাড়ি থেকে দেওয়া সোনার গয়নাও বিক্রি করে। ঝর্ণা বলেন, ‘স্বামী ও শাশুড়ির শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার তার একার উপর হয়নি, তার দেড় বছরের শিশুকন্যার ওপরেও শারীরিক অত্যাচার করা হত। বাপের বাড়িতে ঘটনাটা জানাজানি হওয়াতে একাধিকবার মিটমাটের চেষ্টা হলেও কাজ হয়নি।

১৭ মার্চ অত্যাচার চরমে উঠে, শ্বশুরবাড়িতে তাকে ঘরবন্দী করে সকাল সাড়ে আটটা থেকে স্বামী এবং শাশুড়ি লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায়। বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাস রুদ্ধ করে মারার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করেন ঝর্ণা। খবর পেয়ে বাবা মা এসে উদ্ধার করে তাকে বেলাকোবা গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে যান। অভিযুক্ত দের চরম শাস্তির দাবি জানান সন্ধ্যা রায় ও তার মা আলপনা রায়। শ্বশুরবাড়ির প্রতিবেশী শর্মিলা রায় জানান ঘটনার দিন থেকে আদিত্য রঞ্জন রায় ও তার মা অনিমা রায় বাড়িতে থাকেন না। বধূ নির্যাতনের ঘটনা তারা শুনেছেন। মেয়ের বাপের বাড়ির ফকির টিপের নিবাসী চিকেন রায় বলেন, সন্ধ্যার পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা প্রায়শই তার ওপর অত্যাচার করত।

বেলাকোবা পুলিশ ফাঁড়ির ওসি লছমন পোখরেল বলেন, সন্ধ্যা রায়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বধূ নির্যাতন ও অন্যান্য ধারায় কেস দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে পুলিশ অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে অভিযান চালিয়েছে কিন্তু তারা পলাতক। যথা শীগ্রই গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান তিনি।