দেহ ব্যবসার অভিযোগ নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা রাজগঞ্জে

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ঘটনা মিটতে না মিটতেই এবারে এক অন্য ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক পারদ চড়ল রাজগঞ্জের সন্ন্যাসীকাটা অঞ্চলে। নিজের পাড়ায় বাইরে থেকে মহিলা এনে দেহ ব্যবসার অভিযোগ উঠল স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। হাতে নাতে ধরতে গিয়ে গ্রামবাসিদের ওপর আক্রমণও করা হয় বলে অভিযোগ। বিস্ফোরক অভিযোগ রাজগঞ্জের সন্ন্যাসীকাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দাপুটে বিরোধী নেতা সৌকত আলীর বিরুদ্ধে। থানায় লিখিত অভিযোগও জমা পড়েছে।

ঘটনার রাতেই অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যে। সৈকত আলি বলেন, ‘খবর পেয়ে আমিও ঘটনাস্থলে বিষয়টি দেখতে যাই। সেসময় কয়েকজন তাকে ঘিরে ধরে চরাও হয় এবং তাঁর মোবাইল ভেঙ্গে দেয়।’ যদিও বুধবার তাঁর মোবাইল সুইচ অফ থাকায় তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকায়৷ এলাকার যুব তৃণমূল সভাপতি তহমিদার রহমান অভিযোগ করে জানান, এলাকার স্বানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সিপিআইএম নেতা সৌকত আলী মাঝে মধ্যেই শিলিগুড়ি থেকে মেয়ে নিয়ে এসে এলাকায় অবৈধ কাজ চালাচ্ছে। গতরাতে এলাকারই কিছু যুবক হাতে নাতে পাকড়াও করলে ওই মহিলা সরাসরি অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য ও এলাকারই আরেক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ওই মহিলার স্বীকারোক্তি মোবাইলে ক্যামেরাবন্দি করতে গিয়ে লোহার রড দিয়ে হামলা চালান ওই পঞ্চায়েত সদস্যেরই লোকজন।

মারধরের অভিযোগে উত্তেজিত হয়ে ওঠে এলাকার মানুষ। এরপরই অভিযুক্তরা পালিয়ে যান ঘটনাস্থল থেকে। আচমকা হামলায় মাথায় আঘাত লেগে গুরুতর জখম হন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন যুবক হায়দার আলি৷ তড়িঘড়ি তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পাশাপাশি সন্ন্যাসীকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সভাপতি রৌশন হাবিবের মাথায় আঘাত লাগে বলে জানা গিয়েছে৷ বুধবার রাজগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ পুরো বিষয়টি তদন্ত করছে। অপরদিকে অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক বলে জানা গিয়েছে৷

অন্যদিকে, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সর্বদলীয় বৈঠক করে রাজগঞ্জ থানার পুলিশ। রাজগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে বেশ কয়েক জায়গায় ভোট পরবর্তী হিংসা হয়েছে। তাই এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য রাজগঞ্জ থানার তরফে সর্বদলীয় বৈঠক করা হয়। বৈঠকে তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এদিনের বৈঠকে জলপাইগুড়ির ডিএসপি সমীর কুমার পাল, রাজগঞ্জ থানার আইসি পঙ্কজকুমার সরকারের উপস্থিতিতে পুলিশের তরফে সব রাজনৈতিক দলকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আহ্বান করা হয়।

আইএনটিটিইউসির জলপাইগুড়ি জেলার কার্যকরী সভাপতি তপন দে বলেন, বিজেপির কেউ কেউ সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা প্রচার করছে। বিজেপি নেতৃত্বকে তা বন্ধ করতে বলেছি। যেসব বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া হয়ে আছে তাদেরকে আমরা বাড়িতে ফিরিয়ে আনব। বিজেপির রাজগঞ্জ দক্ষিণ মন্ডল সভাপতি বিধান ঝা বলেন, আমরা শান্তির পক্ষে। যদি দলের কেউ মিথ্যা প্রচার করে তা মেনে নেওয়া হবে না।

About The Author