ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ অব্যাহত। পুরদস্তুর যুদ্ধ চলছে। শনিবার সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই নিয়ে ফোন করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। যুদ্ধ থামাতে রাজনৈতিক ভাবে সহযোগিতার আবেদন করেছেন জেলেনেস্কি। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ ফোনে কথা হয়। ফোনালাপ শেষ হওয়ার পর এ বিষয়ে টুইট করেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।
https://twitter.com/ZelenskyyUa/status/1497555947023224836
টুইট করে তিনি জানিয়েছেন, ‘রাশিয়ার হিংস্রতা নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলেছি। যুদ্ধের ভয়ানক পরিস্থিতির ব্যাপারে জানিয়েছি। এক লক্ষেরও বেশি রাশিয়ার সেনা ইউক্রেনের মূল ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েছে। দেশের নাগরিকদের বাড়ি ঘর ধ্বংস করছে তারা।’ এর সঙ্গে এও লিখেছেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে রাজনৈতিকভাবে সাহায্য করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কি। একসঙ্গে আগ্রাসনকারীকে প্রতিরোধের আবেদন রেখেছেন তিনি।’
রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি ভারত। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আমেরিকা এবং তার সহযোগী রাষ্ট্রগুলির আনা ওই প্রস্তাব ঘিরে ভোটাভুটিতে অংশ না নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন, ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি। রাশিয়ায় বিরুদ্ধে আনা ওই প্রস্তাবের পক্ষে ১১টি ভোট পড়ে। ভারত ছাড়াও চিন এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি। তবে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়া ভেটো প্রয়োগ করায় প্রস্তাবটি পাশ হয়নি নিরাপত্তা পরিষদে।
প্রেসিডেন্ট ‘ঝুকেগা নেহি’! নেটদুনিয়ার সাবেক হিরো ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কি
https://twitter.com/StephenSeanFord/status/1497367687021744128
দেশে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। সকলের কাছে সাহায্য চেয়েও কার্যকারী সাহায্য পাচ্ছেন না। তবে যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে পালিয়েও যাননি তিনি। ইউক্রেনের কঠিন সময়ে দেশ বাঁচাতে আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশকে রক্ষা করতে হাতে বন্দুকও তুলে নিলেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি। যুদ্ধের পরই সেনাদের সঙ্গে রাস্তায় নেমে পড়েছেন। ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, দেশ ছেড়ে কোথাও পালাচ্ছেন না তিনি। সেনাবাহিনীর সঙ্গেই হাত মিলিয়ে দেশকে রক্ষার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এই ছবি ও ভিডিয়ো। সেনার পোশাক গায়ে বিধস্ত জায়গা ঘুরে দেখছেন ইউক্রেনের প্রিয় প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কি। সামাজিক মাধ্যমে এখন শুধু তারই ছবি ছড়িয়ে। তিনি এখন নেট দুনিয়ার সাহসি হিরো।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পরই দেশবাসীকে তিনি জানিয়েছিলেন, আক্রমণ নয়, প্রতিরোধ গড়তে হবে। সক্ষম ব্যক্তিরা দেশে থেকেই আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিন। সরকার সাহায্য করবে। রাজধানী কিভের আরও কাছে এগিয়ে এসেছে রুশ। প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কি জানান, রাশিয়ার তরফে তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে প্রথম নিশানা বানানো হয়েছে। রাশিয়ার আগ্রাসনী শক্তির মুখে পড়েও তিনি যেভাবে সাহস প্রদর্শন করছেন এবং লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, তাকে সাধুবাদ জানিয়েছে নেটাগরিকেরা।
রাজধানী কিভের ওপর আক্রমণের খবরে প্রেসিডেন্ট রাজধানীতে পৌঁছেছেন এবং সেখানেই একটি বাঙ্কারে থাকেন। একাধিক শীর্ষ আধিকারিকদের পাশে নিয়েই রাশিয়ার চাপের জবাব দিতে দেখা যায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কিকে। দেশবাসীর উদ্দেশে পোস্ট করা ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই এখানে রয়েছি। আমাদের মিলিটারি বাহিনী রয়েছে। সমাজের সাধারণ মানুষও রয়েছে। আমরা সবাই মিলেই আমাদের স্বাধীনতার জন্য, দেশের জন্য লড়াই করছি। আগামিদিনেও এইরকমভাবেই একসঙ্গে থাকব আমরা।’