১৫০ গজে বাংলাদেশের আপত্তি! রাজগঞ্জ সীমান্তে সেতুর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

দেবজিৎ সরকার: রাজগঞ্জের কুকুরজান এবং সুখানী অঞ্চলে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা গ্রামগুলির মধ্যে সংযোগ রেখেছে চাউই নদীর ওপর তৈরি আদ্দিকালের লোহার ব্রিজটি। এরই ভরসায় চাউলহাটি, ভোলাপাড়া-সাহেবপাড়ার মানুষজন পাশাপাশি দুই শহরে যাতায়াত রেখেছে। তবে এখন আর সেই জরাজীর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেতে দিচ্ছে না বিএসএফ। ফলে চাউলহাটি থেকে সুখানীর দুটি গ্রামে প্রায় ১৪ কিমি পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। সমস্যা হবে বুঝে ২০২১-এই সেতুটি সারানোর উদ্যোগ করেছিল জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ। কিন্তু তাতে আপত্তি জানায় বাংলাদেশ। সেতু-সমস্যার জেরে চিকিৎসা, ব্যবসার ব্যাপারে সীমান্তবাসীদের ভোগান্তি চরমে।

রাজগঞ্জের চাউলহাটির ওই সেতুটি দীর্ঘ কয়েক বছরের পুরনো। সীমান্তবাসীদের পাশাপাশি বিএসএফ-এরও যোগাযোগের একমাত্র সহজ পথ। তবে এখন সেতুটির এখন-তখন অবস্থা। তাই বাইক-সাইকেল ছাড়া অন্য গাড়ি যেতে দেওয়া হচ্ছে না। সম্প্রতি বাংলাদেশের অশান্তির জেরে সেখানে বিএসএফ-র কড়াকড়ি আরও বেড়েছে। সমস্যায় জর্জরিত গ্রামবাসীরা জানান, জরুরী কাজে গাড়ি নিয়ে এদিকে এলেই বিএসএফ-র বাধা পেয়ে কয়েক কিমি পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। রাজগঞ্জের সাহেবপাড়া, ভোলাপাড়া, চাউলহাটিবাসীদের জন্য সেই পথ ছিল মাত্র ১.৫-২ কিমি’র।

এলাকাবাসীদের দাবি মেনে, তিন বছর আগেই সেখানে নতুন ব্রিজ তৈরির জন্য ৫ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে জেলা পরিষদ। কাজের শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন সভাধিপতি উত্তরা বর্মন এবং বিধায়ক খগেশ্বর রায়। ব্রিজের পাশেই বড় হোর্ডিং‌ও লাগানো হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের আপত্তির কারণে ওই কাজের সবুজ সংকেত দেয়নি বিএসএফ। অন্যদিকে, ২০১০ সালে ওই সেতু থেকে ২ কিমি উত্তরে একটি সেতু তৈরি করেছিল বাম আমলের প্রশাসন। জমি সমস্যার জন্য বিগত ১৪ বছরেও অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি হয়নি। ওটি চালু হলেও সমস্যা মিটত। তবে এই মুহূর্তে সেই আশাও নেই। কাজেই সীমান্তবাসীর এই ভোগান্তি যে কবে শেষ হবে? সদুত্তর নেই কোনও মহলেই।

সেতু জটিলতা নিয়ে বিএসএফ-র এক আধিকারিক বলেন, আন্তর্জাতিক সীমানার শূন্য রেখা থেকে ১৫০ গজের মধ্যে কোনও নির্মাণ কাজ করা যাবে না। চাউলহাটি সীমান্তে চাওয়াই নদীর ওপর যেই ব্রিজটি রয়েছে সেটি অনেক পুরনো। এখন সেটির ওপর দিয়ে ভারী গাড়ি যাতায়াতের কোনও উপায় নেই। ব্রিজটি নতুন করে তৈরি করাতে গেলে বিজিবি-র তরফে আপত্তি আসছে। বিকল্প সেতু বানাতে হলে ১৫০ গজ সরে আসতে হবে। এই প্রসঙ্গে বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, আমরা তিন বছর আগে সেখানে নতুন করে সেতু তৈরির উদ্যোগ করেছিলাম কিন্তু বিএসএফ সহযোগিতা করতে চাইছে না। বিএসএফ তো কেন্দ্রের সংস্থা। তাই হয়ত রাজ্যের উন্নয়নে বিরোধিতা থাকতে পারে। অন্য কোনও কারণ থাকলে জানা নেই।

About The Author