রাজগঞ্জে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী কে? কৌতুহল তুঙ্গে

রাজগঞ্জ: নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও দলই আনুষ্ঠানিকভাবে বিধানসভার প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেনি। জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ বিধানসভায় তৃণমূলের দুই মুখ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। যদিও ভোটে কে দাঁড়াবেন, এই দু’জন ছাড়া অন্য কেউ টিকিট পাবে কি না, তা ঠিক করবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে, রাজগঞ্জ বিধানসভা নিয়ে আশার আলো দেখছে বিজেপি। এই কেন্দ্রে কমপক্ষে ৩০ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকবেন তারা, এমনটাই দাবি করা হয়েছে বিজেপির তরফে। স্বাভাবিকভাবেই, রাজগঞ্জে বিজেপির প্রার্থী নিয়ে রাজনৈতিক মহল এবং সাধারন মানুষের মনে কৌতুহল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

রাজগঞ্জে সম্ভাব্য বিজেপির বিধায়ক পদপ্রার্থী হিসেবে যাদের নাম উঠে আসছে, তাদের মধ্যে ৩ জনই রাজগঞ্জের পার্শ্ববর্তী বিধানসভার এলাকার বাসিন্দা। এদের মধ্যে রয়েছেন ডাবগ্রাম বিধানসভার সুপেন রায়। তিনি জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। বিজেপির সম্ভাব্য পদ প্রার্থীর তালিকায় অনন্ত অধিকারীর নামও রয়েছে। তিনি জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির কোষাধক্ষ্য। আরও একটি মুখ হিসেবে জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর এলাকার হারাধন সরকারের নাম রয়েছে। তিনি বিজেপি তপশিলি মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।

রাজগঞ্জ বিধানসভা থেকে পানিকাউরি অঞ্চলের বিরোধী দলনেতা দীপক মণ্ডল, বেলাকোবা থেকে ডাঃ শংকর প্রসাদ বর্মণ, শিকারপুর অঞ্চলের পঞ্চায়েত সদস্য তথা রাজগঞ্জ বিজেপির উত্তর মন্ডলের সহ-সভাপতি তপন রায়ের নাম সম্ভাব্য পদপ্রার্থীদের তালিকায় উঠে এসেছে। সম্ভাব্য মুখ হিসেবে উঠে এসেছে রাজগঞ্জ দক্ষিণ মন্ডলের সাধারণ সম্পাদক মন্টু বর্মনের নাম। এছাড়াও সারিয়াম এলাকার সত্যেন্দ্র নাথ মন্ডল, শিক্ষক সত্য রায় এদের নাম উঠে আসেছে। যদিও বিজেপির পদপ্রার্থী হিসেবে কে চূড়ান্ত হবেন তা জেলা নেতৃত্বের মতামত নিয়ে ঠিক করবে বিজেপির উপর মহল। আসছে দু-একদিনের মধ্যেই প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করতে পারে বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তার আগেই বিধানসভা থেকে নামগুলি পাঠানো হবে জেলা নেতৃত্বের কাছে।

একুশের নির্বাচনের রাজগঞ্জ বিধানসভা কার দখলে থাকবে তা সময়ই বলবে। তবে বিগত ভোটগুলির ফলাফল লক্ষ্য করলে বোঝা যায়, ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে রাজগঞ্জ কেন্দ্রে বর্তমান বিধায়ক খগেশ্বর রায় তৎকালীন সিপিআইএমের প্রার্থী সত্যেন্দ্র নাথ মণ্ডলকে পরাজিত করেছিলেন। তৃণমূল বিধায়ক ভোট পেয়েছিলেন ৮৯ হাজার ৭৮৫, যেখানে সিপিএম প্রার্থী সত্যেন্দ্র নাথ মন্ডল পেয়েছিলেন ৭৫ হাজার ১০৮। তৎকালীন বিজেপির প্রার্থী প্রকাশ চন্দ্র রায় পেয়েছিলেন ১৭ হাজার ৮১১টি ভোট।

২০১১ সালে, সেসময়ের সিপিএম প্রার্থী অমূল্যকুমার রায়কে ৭ হাজার ২০টি ভোটের ব্যবধানে বিজিত করেছিলেন খগেশ্বর রায়। ২০০৬ সালে, ৪৯ হাজার ৪৭২টি ভোটে সেসময়ের সিপিএম প্রার্থী মহেন্দ্র কুমার রায়ের কাছে হেরে যান বর্তমান বিধায়ক খগেশ্বর রায়। রাজগঞ্জ বিধানসভায় রাজনীতির হাওয়া বর্তমানে বিজেপির দিকেই ইঙ্গিত করলেও রাজগঞ্জ বিধানসভাটিকে শাসকদলের কেন্দ্র হিসাবে ধরা থাকবে বলে আশাবাদী তৃণমূল। যদিও শাসকদলের সম্ভাব্য প্রার্থীর দুই প্রতিনিধির ঠান্ডা যুদ্ধ কিছুটা হলেও বিজেপিকে বাড়তি সুবিধা দেবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।