জলপাইগুড়ি: রাজগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী খগেশ্বর রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাস। দল ছেড়ে ‘নির্দল’ হিসেবে লড়াই করার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। তবে কলকাতায় অভিষেক ব্যানার্জি এবং টিম পিকে’র সঙ্গে বৈঠকের পর বিক্ষোভের সুর নরম করে দলের হয়েই নির্বাচনী কাজকর্ম করবেন বলে জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে তার অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উপর হামলার অভিযোগ তুলে সেই ঘটনার প্রতিবাদ জানান তিনি। এর আগে রাজগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন কৃষ্ণ দাস। যদিও, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে সমর্থন করেন তিনি এমনটা আগে থেকেই জানিয়েছেন। তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই প্রার্থী না পছন্দের কথা জানিয়ে ছিলেন কৃষ্ণ দাস। তার অভিযোগ ছিল, ‘বিধায়ক মাতাল এবং বধূ নির্যাতনের ঘটনায় যুক্ত’।
বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠকে কৃষ্ণ দাস জানান, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় আমি খুশি। দলের কাছে কিছু চাইনি। বিজেপির তরফে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু আমি বিজেপিতে যাব না।’ ‘দল যে দায়িত্ব দেবে সেই দায়িত্বই পালন করব। জেলা জুড়ে প্রচার করব।’
প্রথমটায়, মুখ্যমন্ত্রী এবং পিকের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি। প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর প্রবল অসন্তোষ প্রকাশ করে নির্দল হিসাবে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। মিডিয়ার সামনেও জানিয়েছিলেন সেকথা। জলপাইগুড়ি জেলার সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই এসসি-এসটি-সেলের তরফে প্রার্থী দেওয়ার কথা উঠে এসেছিল। কৃষ্ণ দাসকে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে চেয়ে পথেও নেমে ছিলেন তার সমর্থকেরা।
গত শুক্রবার খগেশ্বর রায়ের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা হতেই তিনি জানিয়েছিলেন, ‘আমার লড়াই তৃণমূলের বিরুদ্ধে নয়; আমার লড়াই বর্তমান বিধায়ক তথা তৃণমূল প্রার্থী খগেশ্বর রায়ের বিরুদ্ধে। তিনি একজন মাতাল এবং দুশ্চরিত্র। তাই মমতা ব্যানার্জিকে সমর্থন করেই নির্দল হিসাবে ভোটে দাড়াব এবং রাজগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র জিতে মুখ্যমন্ত্রীকে উপহার দেব। নির্দল হয়ে দাঁড়ানোর ঘোষণা এবং তারপর সেই মর্মে কাজও শুরু করে দিয়েছিলেন তার সমর্থকরা।
পরবর্তীতে বৈঠকের ডাক আশায় সেই কর্মসূচি স্থগিত হয়েছিল। এদিকে রাজগঞ্জের বারোটি পাঞ্চোলি দাদার সমর্থকরা পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান। বর্তমান পরিস্থিতিতে, পিকে এবং অভিষেক ব্যানার্জির সঙ্গে সেই বৈঠক ইতিবাচক হয়েছে। যার ফলে এই মুহূর্তে রাজগঞ্জের মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন করে তার হয়েই প্রচারে নামছেন কৃষ্ণ দাস। দাদার অনুগামীরা আগেই জানিয়েছিলেন, ‘দাদাই হল সংগঠনের মূল নেতা! তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন সকলেই তা মাথা পেতে মেনে নেব।’