ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। বর্তমান পরিস্থিতি দ্রুত শোধরানো না গেলে দু’পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংযুক্ত রাষ্ট্রপুঞ্জ। যদিও, হামলাকারীদের যোগ্য জবাব দেবে বলে জানিয়েছে ইজরায়েল সরকার। ইজরায়েলের এই ‘অধিকার আছে’ বলে মত দিয়েছে আমেরিকার বাইডেন সরকার। এদিকে এই সংঘর্ষে দু’পক্ষেরই হতাহতের সংখ্যা হাজারেরও বেশি। গাজার ১৪ শিশু সহ ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, ইজরায়েলে ৭ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।
বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ইজরায়েলি পুলিশ। তারা জানিয়েছেন, ইজারায়েলি পুলিশের ৩৬ জন আধিকারিক আহত হয়েছেন। হামাস পরিচালিত গাজা সরকার জানিয়েছে, এপর্যন্ত তাদের ৬৫ জন মারা গিয়েছেন এবং ৩৬০ জন আহত হয়েছেন। সপ্তাহ আগে পূর্ব জেরুসালেম এলাকায় মুসলিম-জেউ সম্প্রদায়ের মধ্যে ঝামেলা হয়। এই ঘটনাই চলতি যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিকে উস্কে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই লড়াইয়ের তীব্রতা সংযুক্ত রাষ্ট্রপুঞ্জকে উদবিগ্ন করে তুলেছে। পরিস্থিতি যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে, সতর্ক করেছে ইউএন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে জানা গিয়েছে, ইজরায়েল অধিকৃত গাজা ভূখণ্ড এবং জেরুসালেমের একাংশে সোমবার হঠাৎই হামলা চালিয়েছিল প্যালেস্তাইনি জঙ্গিরা। আয়রন ডোম অ্যান্টি-মিসাইল সিস্টেমের দৌলতে হামাসের হামলা প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে ইজরায়েল। গাজা থেকে আক্রমণকারীরা ১৩০ টি মিসাইল ছেড়েছে বলে তারা দাবি করেছে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে আতঙ্কিত গাজাবাসী রাতারাতি বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন। প্যালেস্তাইনি জঙ্গিগোষ্ঠী হামাস এই হামলার দায় নিয়েছে। তারা জানিয়েছে, ইজরায়েলি দমন-পীড়নের জবাব দিতেই এই হামলা চালিয়েছে তারা। ইজরায়েল জানিয়েছে, হামাসের জঙ্গি সংগঠন গত ৩৮ ঘণ্টায় দেড় হাজারেরও বেশি রকেট ছুঁড়েছে।
ঘটনার পরপরই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে একাধিক ভিডিও। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আকাশের ওপার থেকে ছুটে আসছে একঝাঁক রকেট। ইজরায়েলি সেনার মতে, এগুলির সংখ্যা অন্তত শ’দেড়েক তো হবেই। বিশেষ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাহায্যে অধিকাংশ রকেটের অভিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি অনেকটা আটকানো গিয়েছে। পাল্টা জবাব দিয়েছে ইজরায়েলও। মঙ্গলবার সকালেও জারি ছিল সেই সংঘর্ষ। হামলাকারী হামাস জঙ্গিদের উদ্দেশে আক্রমণ হেনেছে ইজরায়েলি সেনারা। ইজরায়েল সরকারের মতে, ২০১৪ সালের যুদ্ধের পরে এত বড় হামলা আর হয়নি। ইজরায়েলি প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, এই হামলার কড়া জবাব দেওয়া হবে ইজরায়েলের তরফে। সংযুক্ত রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্টোনিও গুতেরেস এই ঘটনায় ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন।