নিয়তির কঠিন পরিহাস, অসহায় দিন কাটাচ্ছেন জলপাইগুড়ির প্রাক্তন তবলা শিল্পী

জলপাইগুড়ি: এ যেন এক হারিয়ে যাওয়া শিল্পীর বাস্তব উপাখ্যান। নাম রমেন ঘোষ। বয়স ৭৯। একসময় ভালো তবলা শিল্পী হিসেবে পরিচিত ছিলেন জলপাইগুড়ি শহরে। তবলা শেখাতেন ছাত্র-ছাত্রীদের। কিন্তু সে সবই অতীত। বর্তমানে প্রবীণ শিল্পী বার্ধক্যজনিত ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। চুল সময়ে না কাটায় লম্বা হয়ে জট পাকিয়ে গেছে। পায়ের নখও বড়ো হয়েছে অস্বাভাবিকভাবে। জলপাইগুড়ি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিবেদিতা সরণির একটি ছোট্ট গলির মধ্যে অতি সাধারণ ঘরে বাস। অন্ধকার ঘরে সারাক্ষন মশারি টাঙিয়ে থাকেন। তার মধ্যেই চলছে শিল্পীর জীবিকা বাস। বিয়ে করেন নি। নিজের পরিবার বলতে কিছু নেই। ৫ ভাইয়ের মধ্যে তিনিই কনিষ্ঠ। দাদারা গত হয়েছেন আগেই। এখন নিজের বলতে ভাইপো ও তাঁর স্ত্রী। যেটুকু সম্ভব তাঁরাই রমেন বাবুর দেখাশোনা করেন।

পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য সৈকত চট্টোপাধ্যায় শিল্পীর জন্য মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। খাবার বা অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে রমেন বাবুর কোনো অভিযোগ নেই। কোথাও যেতে হলে পাড়ার যুবকরাই এগিয়ে আসেন তাঁর সহায়তার জন্য। রমেন বাবুর ভাইপোর স্ত্রী জানান, তাঁর স্বামী বাইরে থাকেন। তাই যতটুকু পারেন চেষ্টা করেন কাকা শ্বশুরের জন্য। এক প্রতিবেশী জানান, যেহেতু উনি বয়স্ক, চলাফেরা করতে পারেন না, খুব ভালো হয় যদি সারাক্ষণ দেখবার মতো একজন মানুষ ওনার পাশে থাকেন। এ বিষয়ে পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য সৈকত চাটার্জী বলেন, শিল্পীকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। তিনি যদি রাজি হন, তাহলে ডাক্তার দেখানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও সারাক্ষণ কেউ যাতে পাশে থাকে তার ব্যবস্থাও করবেন। খুব দ্রুত শিল্পীর সাথে এবিষয়ে দেখা করবেন বলে জানান তিনি।

About The Author