গাজা সমস্যা মেটাতে স্বাধীন প্যালেস্তাইন রাষ্ট্র চাইলেন বাইডেন

আন্তর্জাতিক চাপের কাছে আপাতত নতিস্বীকার করতে হল ইজরায়েলকে। ১১ দিনের রক্ত ক্ষয়ী যুদ্ধের পর অবশেষে থামল যুদ্ধ! ইজরায়েলের অন্তর্বর্তিকালীন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজা ভূখণ্ডে গত দু’সপ্তাহ ধরে চলা সংঘর্ষে ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গাজার নিয়ন্ত্রক প্যালেস্তেনীয় সংগঠন হামাসের সম্মতিতে শুক্রবার ভোররাত থেকে সংঘর্ষ বিরতি কার্যকরও হয়েছে। কিন্তু তার ফলে হিংসাদীর্ণ ওই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তির পথ প্রশস্ত হবে বলে মনে করছেন না আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

বাইডেন বলেছেন, ‘স্বাধীন এবং সার্বভৌম প্যালেস্তাইন রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমেই ওই অঞ্চলে শান্তি ফিরতে পারে।’ নেতানিয়াহু সরকারের উপর সংঘর্ষ বিরতি কার্যকরের জন্য পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির পাশাপাশি আমেরিকাও প্রবল চাপ তৈরি করেছিল। প্রেসিডেন্ট পদে বাইডেনের পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানায় ওয়াশিংটনের পশ্চিম এশিয়া নীতি পুরোপুরি ‘ইজরায়েলপন্থী’ এবং ‘প্যালেস্তাইন-বিরোধী’ হিসেবে পরিচিত হয়েছিল। কিন্তু বাইডেনের শুক্রবারের মন্তব্য তা থেকে সরে আসার ইঙ্গিত বলেই মনে করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার রাত ২টো থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে দু-পক্ষে। গাযার মসজিদগুলোতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধ জয়ের ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে, ইজরায়েল নিজেদের জয় দাবি করেছে। যদিও ইজ়রায়েল মিডিয়ার দাবি, প্যালেস্তাইনের সঙ্গে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ইজরায়েলের ওপর আমেরিকার চাপ বাড়ছিল। তাই একতরফা ভাবেই গাজ়ায় সেনা অভিযান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ২টো থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। সম্প্রতি গাজ়ায় অশান্তি থামানোর আবেদন জানান আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জানান, যে কোনও উপায়ে গাজ়া ভূখণ্ডে হিংসা বন্ধ করাই আমেরিকার লক্ষ্য। গাজ়ায় ইজ়রায়েলি সেনা যে ভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে, তা একান্তই নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য বলে বরাবর দাবি করে এসেছেন নেতানিয়াহু। কিন্তু ক্রমশ বাড়তে থাকা আন্তর্জাতিক চাপের কাছে আপাতত নতিস্বীকার করতে হচ্ছে ইজ়রায়েলকে। তবে এই যুদ্ধ বিরতি কতটা স্থায়ি সে নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মহল।

নয়ের দশকে আমেরিকার মধ্যস্থতায় প্যালেস্তেনীয় নেতা ইয়াসের আরাফতের সঙ্গে ইজরায়েল সরকার অসলো চুক্তিতে সই করেছিল। সেই চুক্তি মেনে গাজা ভূখণ্ড এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক স্বশাসিত অঞ্চল হলেও প্যালেস্তেনীয়দের স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের দাবি পূরণ হয়নি। ট্রাম্পের জমানা পর্যন্ত প্যালেস্তেনীয়দের সেই দাবি সমর্থনের কোনও বার্তা দেয়নি ওয়াশিংটন। শুক্রবার সেই বার্তা দিলেন বাইডেন। তবে সেই সঙ্গেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘ইজারায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি নিয়ে আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তা থেকে সরে আসার কোনও সম্ভাবনা নেই।’ যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ১০ মে, গাজায় এ পর্যন্ত প্রায় একশ মহিলা ও শিশুসহ কমপক্ষে ২৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।