করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১। গত ৫ এপ্রিল করোনা সংক্রমণের রিপোর্ট পজিটিভ আসে তাঁর। শুক্রবার গভীর রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় কবরীর। ১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে জন্ম কবরীর। তাঁর আসল নাম মিনা পাল। বাবা শ্রীকৃষ্ণদাস পাল এবং মা লাবণ্য প্রভা পাল। ঋত্বিক ঘটকের ছবি ‘তিতাস একটি নদীর নাম’-এ মূল চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া দু’বাংলার অসংখ্য ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি দীর্ঘদিন সক্রিয় ছিলেন রাজনীতিতেও। পরিচালনার কাজও করেছেন বাংলাদেশের জাতীয় পুরষ্কার জয়ী এই অভিনেত্রী। কাশি এবং জ্বরের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কবরী। তবে করোনা সংক্রমণের রিপোর্ট পজিটিভ আসার দু’দিন পর ৭ এপ্রিল শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় তাঁর। চিকিৎসকরা তাঁকে অবিলম্বে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিলেও তা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ৮ এপ্রিল দুপুরে ঢাকার একটি হাসপাতালে কবরীর জন্য আইসিইউ পাওয়া যায়। পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হলেও শেষপর্যন্ত বাঁচানো যায়নি কবরীকে। টানা ১৩ দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১২টা ২০ নাগাদ মৃত্যু হয় অভিনেত্রীর। বাংলাদেশের ওই সংবাদমাধ্যমকে অভিনেত্রীর মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন তাঁর ছেলে শাকের চিশতি। ১৯৬৪ সালে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় কবরীর। পরে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঢাকা থেকে কলকাতায় আসেন। সেসময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ভারতে জনমত তৈরির চেষ্টাও করেছিলেন কবরী। বিভিন্ন সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠান করেছেন। বক্তৃতা দিয়েছেন। পরে ১৯৭৩ সালে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবিতে অভিনয় করেন। ১৯৭৮ সালে ‘সারেং বউ’ ছবিতে তাঁর অভিনয় বাংলাদেশের জাতীয় পুরষ্কারের সম্মান এনে দেয় তাঁকে। পরে রাজনীতিতেও আসেন কবরী। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লিগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। ৬ বছর বাংলাদেশের সংসদের সদস্যও ছিলেন তিনি। নারায়ণগঞ্জ-৪ কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন ভোটে। পরে অবশ্য রাজনীতি ছেড়ে ফের অভিনয় এবং ছবি পরিচালনায় ফিরে আসেন।