জলপাইগুড়ি: গ্রামে জল ঢোকা আটকাতে রাস্তার ওপর বাঁধ তৈরি করেছেন গ্রামবাসীরা। বাঁধের ওপারে কোমর-সমান জল। এপারে যেন জলশূন্য নদী উপত্যকা, কাদায় ভর্তি রাস্তা। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। গ্রামের একমাত্র রাস্তার ওপর মাটি-বস্তা বেঁধে তৈরি করা হয়েছে যাতে বাইরের জল গ্রামে না ঢোকে। কিন্তু শত চেষ্টা সত্ত্বেও গ্রামে জল ঢোকা আটকানো গেল না।
এটা কোনও সমুদ্র বা নদীর তীরবর্তী এলাকার ঘটনা নয়। সাধারণ গ্রামের মতই একটি অজপাড়া গাঁয়ের ঘটনা। নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘ চার বছর ধরে হাঁটু সমান জলে দিন কাটাতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। বৃষ্টি বেশি হলে কোমর সমান জলে যাতায়াত করতে হয় বর্ষার দিনগুলিতে। কোনটা পুকুর আর কোনটা রাস্তা, আলাদা করে বোঝার অবকাশ নেই। দীর্ঘ চার বছর ধরে এমনই পরিস্থিতি দেখছেন জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাউরাচন্ডিকামাত গ্রামের মানুষ। তালমা থেকে ৫ কিমি ভেতরে সাতখামার পোস্ট অফিস এলাকায় অবস্থিত এই গ্রাম।
স্থায়ী বাসিন্দা রমেশ চন্দ্র রায় জানান, ছোট থেকেই এই গ্রামে রয়েছেন। আগে বর্ষাকালে এতটা সমস্যা হতো না। তবে দীর্ঘ ৪-৫ বছর ধরে গ্রামে নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় গম্ভীর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এলাকার প্রায় ২৫টি পরিবার সমস্যায় ভুগছেন। বর্ষা এলেই দু-তিন মাস এভাবেই জল-যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রশাসনিক মহলে বারবার দরবার করেও কোনও কাজ হয়নি।
গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, আগে নিকাশি ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু গত চার বছর আগে স্থানীয় বাসিন্দা মুজিবর রহমান ওই নিকাশি নালার একটি অংশ নিজের ভিটের অংশ বলে দাবি করে নিকাশি নালার জন্য জমি ছাড়তে রাজি হয়নি। অভিযোগ, নিকাশি নালা আটকানোর ফলে এই সমস্যা পোহাতে হচ্ছে গোটা গ্রামের মানুষগুলিকে। যদিও এই অভিযোগ নিয়ে ওই ব্যক্তির সাফ কথা, গ্রামের বাকিদের মতো আমিও চাই নিকাশি ব্যবস্থা করা হোক। আমার বাড়িতেও জল জমেছে। তবে তার জন্য একজন ব্যক্তির জমির উপর দিয়ে নিকাশি করা হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। প্রশাসন রয়েছে তারাই ব্যবস্থা করুক।
স্থানীয় পঞ্চায়েত তপন রায় জানান, বিষয়টি তিনি দেখেছেন। সুব্যবস্থার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুধীর চন্দ্র রায় জানান, গ্রামের সবার সঙ্গে কথা বলে খুব তাড়াতাড়ি এই সমস্যার সমাধান করে দেওয়া হবে।