‘তোর বাপকে গিয়ে বল, তোর বাড়ির ৫ কিমির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি’

কাঁথি: ধরে ধরে শুভেন্দুর প্রশ্নের উত্তর দিলেন ‘ভাইপো’।  শনিবার কাঁথিতে কার্যত শুভেন্দুর পাড়ায় সভা করে তার প্রত্যেকটির ধরে ধরে জবাব দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গেই সরাসরি নাম করে নিশানা করলেন শুভেন্দু এবং তাঁর পরিবারকে। কাঁথিতে শুভেন্দুর বাড়ি ‘শান্তিকুঞ্জ’-র কয়েক কিলোমিটার দূরে তৃণমূলের বিশাল সভা থেকে অভিষেক বলেন, ‘এমনিতে তো জোকারের মতো মুখ! তার উপর বড় বড় কথা! আমাকে বলছে যে, ‘এলে দেখে নেব। যদি না শোধরাও, ওই করব, তাই করব। আরে তোর বাপকে গিয়ে বল, তোর বাড়ির পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি! যা করার কর! আয়’! হিম্মত আছে? এই মেদিনীপুরের মাটিতে, তোমার মাটিতে, তোমার পাড়ায় তোমার এলাকায় দাঁড়িয়ে তোমায় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে যাচ্ছি।’’ এরপর তাঁর শ্লেষ, ‘‘চার আনার নকুলদানা, তার আবার ক্যাশমেমো। আমাকে থ্রেট দিচ্ছে! আজকে এলাম। আগামী দু’মাসের মধ্যে আরও পঞ্চাশ বার আসব। জামানত বাজেয়াপ্ত করব।’

অভিষেকের বক্তৃতার প্রেক্ষিতে শনিবার বিকেলে শুভেন্দু ফেসবুক পেজে ‘তোর বাপকে গিয়ে বল’ মন্তব্যটি উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, ‘কাঁথির জনসভা থেকে বাংলার সংস্কৃতি’। বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় টুইট করেছেন, ‘মুখের ভাষাতেই প্রমাণ, পিসির যোগ্য উত্তরসূরি। বাংলার মানুষ এই সংস্কৃতিকে মানবে না। ছুড়ে ফেলে দেবে’। শুভেন্দু আগেই বলেছিলেন, ‘আমি (অভিষেককে) ‘আপনি’ করে কথা বলি। ওর থেকে আমি ১৮ বছরের বড়।’ অভিষেকের জবাব, ‘আমি কাউকে তুই-তোকারি করি না। কিন্তু বেইমানদের আমি তুই-তোকারি করি।’

অভিষেকের আরও দাবি, দীর্ঘদিন ধরে বলা হয় মেদিনীপুর না কি অধিকারী পরিবারের ‘গড়’। কিন্তু তাঁর কথায়,‘‘অধিকারী গড় আবার কী? এই জেলা একটা পরিবারের না কি? এই জেলা তো মেদিনীপুরের মানুষের।’ জনতার উদ্দেশে তাঁর আবেদন, ‘জোরে আওয়াজ তুলুন। পাঁচ কিলোমিটার দূরেই তো শান্তিকুঞ্জ। সেটা যেন থরথর করে কাঁপে।’ শুভেন্দু এবং তাঁর পরিবারকে ‘মিরজাফর অ্যান্ড কোম্পানি’ হিসেবে চিহ্নিত করে ‘মেদিনীপুর থেকে বিতাড়িত’ করারও আহ্বান জানান অভিষেক।

সারদা-কাণ্ডে প্রতারিতদের ‘পরামর্শ’ দেন ‘গদ্দার’-দের বাড়ি ঘেরাও করতে। তবে সেই সঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘বাড়িতে বয়স্ক লোক রয়েছে। মাইকের আওয়াজ যাচ্ছে। আমি চাই না কোনও অঘটন ঘটুক।’’ কাঁথির জনসভায় অভিষেক বক্তৃতা করেছেন প্রায় ২৮ মিনিট। খানিকটা উত্তেজিতই দেখিয়েছে তাঁকে। বলেছেন, ‘‘আমার এখানে সভা আছে, সাতদিন-আট দিন আগে বলেছিলাম। ফেসবুকে আবার অনেকে ভিডিয়ো ছাড়ছে, যাতে আমি ভয়ে এখানে না আসি। আমাকে ভয় দেখাবে ভাবছে!’’ ঘটনাচক্রে, এর আগে শেষ বার ২০১৫-র জানুয়ারিতে পূর্ব মেদিনীপুরে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন অভিষেক। নন্দকুমার-দিঘা জাতীয় সড়কের ধারে মঠ চণ্ডীপুরে সভায় মঞ্চের উপরেই অভিষেকের।