জলপাইগুড়ি: শীতের মরশুমে বাইরে থেকে যেমন পরিয়াযী পাখিরা আসে ঠিক তেমনই বাংলাদেশের ঠিকানা ছেড়ে ভারতে তিস্তাপাড়ের গজলডোবায় চলে আসেন বাংলাদেশের রাজশাহির আবদুল রহিম। এবারও গজলডোবায় এসেছেন খেজুর গুড় তৈরি করতে। গত কয়েক বছর থেকে তিনি শীতের মরসুমে এপারে চলে আসেন। পেটের টানে ভিটেমাটি ছেড়ে আসতে হয় তাঁকে।
শীত শুরুর আগে কিছু টাকার বিনিময়ে এলাকার প্রায় একশো খেজুর গাছ তিনি বুক করেন। তারপর শুরু হয়ে যায় লড়াই। প্রতিদিন গাছে উঠে হাঁড়ি বাঁধেন। সেই হাঁড়ি নামিয়ে শুরু হয় খেজুর গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। তাঁর হাতে তৈরি গুড় বিক্রি হয় জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বাজারে। লাভ যে খুব একটা বেশি হয় তা নয়। তবু পেটের টানে এবং রসের টানে তার ভারতে আসা। আবার শীতের মরশুম চলে গেলে আবার ফিরে যান নিজের দেশে।
খেজুর গুড় তৈরি করে সবাইকে বছরের পর বছর ধরে মিষ্টিমুখ করান। ভারতের নাগরিকত্ব আইন তাঁকে স্পর্শ করে না। বাংলায় আন্দোলনের আগুনের আঁচ তিনি গায়ে মাখতেও নারাজ। তাঁর নাম-পদবি বা ঠিকানা নিয়ে গজলডোবার দুধিয়া গ্রামের বাসিন্দারাও ভাবতে নারাজ। বরং আবদুল রহিমের হাতে তৈরি খেজুরের গুড় বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেকে দিনের পর দিন প্রতীক্ষা করতেও রাজি।