১৬ দিন ধরে জনসমক্ষে অনুপস্থিত শি জিনপিং। এই প্রথম যোগ দেবেন না BRICS সম্মেলনেও। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির সাম্প্রতিক বৈঠকে ক্ষমতা হ্রাসের ইঙ্গিত। প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়ছেন কি জিনপিং?
চিনের প্রেসিডেন্ট ও কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতা শি জিনপিং হঠাৎ করে ফের আলোচনার কেন্দ্রে। গত ২১ জুনের পর থেকে তাঁকে নাকি জনসমক্ষে দেখা যায়নি, দাবি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের। টানা ১৬ দিনের এই ‘অনুপস্থিতি’ ঘিরে নতুন করে ছড়িয়েছে রাজনৈতিক আলোড়ন। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন, এই নীরবতা ইঙ্গিত দিচ্ছে শি-র দীর্ঘদিনের ক্ষমতা ছাড়ার প্রস্তুতির।
প্রসঙ্গত, চিনের শাসক দলের ২৪ সদস্যের পলিটব্যুরোর সাম্প্রতিক বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, দলের অধীনস্থ শাখা সংগঠনগুলির ক্ষমতা বাড়ানো হবে এবং রাষ্ট্রপ্রধানের নিয়ন্ত্রণ কিছুটা কমানো হবে। বিশ্লেষকদের মতে, এর মানে শি জিনপিং নিজেই ‘ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ’ শুরু করেছেন—যা তাঁর দীর্ঘমেয়াদি একক শাসনের ক্ষেত্রে এক বড় পরিবর্তন।
২০১৮ সালে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে চিনে প্রেসিডেন্টের মেয়াদের সীমা তুলে দেন জিনপিং, যার ফলে তিনি আজীবন ক্ষমতায় থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি রাষ্ট্রপতি, সেনাবাহিনীর প্রধান ও পার্টির সাধারণ সম্পাদক—তিনটি শীর্ষ পদেই রয়েছেন।
তবে ২০২৭ সালে তাঁর তৃতীয় মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগে থেকেই যে নেতৃত্ব রদবদলের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে পলিটব্যুরোর সিদ্ধান্তে। আরও নজরকাড়া ঘটনা—জিনপিং গত মাসে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনেও অংশ নেননি, যা সাধারণত চিনের রাষ্ট্রপ্রধানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক উপস্থিতি।
সবমিলিয়ে, চিনা প্রশাসনের অভ্যন্তরে কী চলেছে তা বাইরে থেকে পরিষ্কারভাবে বোঝা না গেলেও, শি জিনপিংয়ের পদচিহ্ন এবার হয়তো ইতিহাসের নতুন পথে হাঁটছে—ক্ষমতার শীর্ষে দীর্ঘ ১৩ বছরের যাত্রার পর।