বাড়ির পুজো সারতে গিয়ে ৩ সন্তানের মাকে ‘বশ করে পালাল’ পুরোহিত! শেষে মর্মান্তিক পরিণতি

কালীপুজো করতে এসে গৃহবধূকে বশ করে পালাল ‘পুরোহিত’। তিন সন্তান নিয়ে অথৈ জলে রাজমিস্ত্রী স্বামী। অবশেষে মহিলার রহস্য মৃত্যু।

রাজগঞ্জ: বাড়ির কালীপুজোর তন্ত্রাচার করতে এসে তিন সন্তানের মা এক গৃহবধূকে নিয়ে পালিয়ে গেল এক ব্যক্তি। এরপর পাঁচ মাস কাটতে না কাটতেই মারাত্মক দুঃসংবাদ! আচমকাই মহিলার রহস্য মৃত্যু। ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য রাজগঞ্জে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম ধরিত্রী রায় (৩৮)। পরিবারের দাবি, গত ফেব্রুয়ারিতে তোতাইগছের বাড়িতে কালীপুজো করতে পুরোহিত হিসেবে এসেছিল দিলীপ রায় নামের ওই ব্যক্তি। পুজোর পরদিনই আচমকাই ধরিত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যান ব্যক্তি। তাঁর ঘরেও বিবাহিত স্ত্রী আছে। তারপরও এমন কাণ্ড! পরিবারের শঙ্কা, দিলীপ রায় হয়ত বশ করে ধরিত্রীকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়।

ধরিত্রীর স্বামী সিপেন রায়, পেশায় রাজমিস্ত্রি। তাঁদের বিবাহিত জীবনের প্রায় ২০ বছরে রয়েছে তিন সন্তান—যাদের বয়স ১৬, ১৫ ও একজনের মাত্র ২ বছর। ঘটনার পর মিসিং ডায়েরি করা হলে মহিলা জানান, সে আর বাড়ি ফিরবে না। তবে মাঝেমধ্যে ছেলেদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা হতো।

দু’দিন আগেই ধরিত্রী হঠাৎ ভয়েস কলে জানান—”আমার বিপদ হলে বাড়ির লোকজন যেন দরকারি কাগজপত্র এবং প্রমাণাদি খুঁজে দেখে।” এই ফোনকলের ঠিক ৪৮ ঘণ্টা পরে, মেনঘোড়া গ্রামে উদ্ধার হয় তাঁর নিথর দেহ। পরিবার জানিয়েছে, দেহ দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল এবং শরীরে আঘাতের চিহ্নও ছিল। তাঁদের অভিযোগ, “ধরিত্রীকে হয়ত খুন করেছে দিলীপ।”

ঘটনার পর ভোরের আলো থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত করছে গজলডোবা ফাঁড়ির পুলিশ। থানার ওসি সন্দিপ দত্ত জানিয়েছেন, “মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়, তদন্ত চলছে।”

ধরিত্রী রায়ের মা জানকি রায়, তোতাইগছের বাসিন্দা, জানিয়েছেন—”দিলীপ আগে সুখানি ভোলাপাড়ায় থাকত, সেখান থেকেই আলাপ। আমার মেয়েকে বশ করে নিয়ে গিয়েছে।”

ধরিত্রীর স্বামীর বক্তব্য, “একজন স্ত্রী, মা—যিনি স্বামী ও সন্তানদের সঙ্গে সুখে ছিলেন, তিনি হঠাৎ পুরোহিতের সঙ্গে পালিয়ে যাবেন কেন? আর এরপর এমন মর্মান্তিক মৃত্যু? ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হওয়া জরুরি।” পরিবারের দাবি, দিলীপ রায়ের উপযুক্ত শাস্তি হোক, সেই দাবিতে তারা পৌঁছেছেন প্রশাসনের দ্বারে।

About The Author