শেষ রক্ষা হল না! সোমবার প্রয়াত বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্র। কয়েকদিন ধরে স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার কারণে তিনি মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন অভিনেতা। কিন্তু সোমবার দুপুরে আসে দুঃসংবাদ—দীর্ঘ অসুস্থতার পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ধর্মেন্দ্র।
ধর্মেন্দ্রকে বলিউডে বলা হয় ‘হি-ম্যান’, যিনি রোম্যান্টিক নায়ক থেকে শুরু করে অ্যাকশন হিরো—সব চরিত্রেই দর্শকদের মন জয় করেছিলেন। “শোলে”, “চুপকে চুপকে”, “ধূপ ছায়া”, “ফুল অর পাথর”, “যুদ্ধ”, “রাজপুত”—অসংখ্য ছবিতে তাঁর অভিনয় আজও দর্শকদের মনে অমলিন।
ধর্মেন্দ্রর জন্ম ১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর পঞ্জাবের লুধিয়ানার নাসরালিতে। বাবা ছিলেন স্কুল শিক্ষক। অল্প বয়সেই বিয়ে করেন প্রকাশ কৌরকে। পরে হেমা মালিনীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ও বিয়ে বলিউডে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়।
১৯৬০ সালে অর্জুন হিঙ্গোরানির দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে ছবির মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। তবে সাফল্য আসে ১৯৬১ সালে শোলো অউর শবনম দিয়ে। এরপর বন্দিনী তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করে। ষাট ও সত্তরের দশকে তিনি একের পর এক হিট ছবি দেন—ফুল অউর পাথর, মমতা, সত্যকাম, মেরা গাঁও মেরা দেশ, সীতা অউর গীতা, রাজা জানি, সমাধি ইত্যাদি।
১৯৭৫ সালে মুক্তি পাওয়া শোলে তাঁকে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে যুগলবন্দীতে ইতিহাস গড়তে সাহায্য করে। তাঁর ‘বীরু’ চরিত্র আজও কাল্ট হয়ে আছে। রোম্যান্টিক নায়ক থেকে অ্যাকশন হিরো—সব চরিত্রেই তিনি দর্শকদের মন জয় করেছিলেন।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি চরিত্রাভিনেতা হিসেবে নিজেকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেন। প্যায়ার কিয়া তো ডরনা ক্যায়া, লাইফ ইন আ মেট্রো, জনি গদ্দার, ইয়ামলা পাগলা দিওয়ানা সিরিজে তাঁর অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করে। সাম্প্রতিক সময়ে রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি ছবিতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
ধর্মেন্দ্র ৯ বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। ঘায়েল ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার ও ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান। ১৯৯৭ সালে ফিল্মফেয়ার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড এবং ২০১২ সালে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত হন।
তাঁর প্রয়াণে বলিউডে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ভক্তদের কাছে তিনি শুধু অভিনেতা নন, ছিলেন এক যুগের প্রতীক।

