ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকে সায় ভারতের! ‘যুদ্ধ থামুক, বরাবরই চান মোদী’, বিবৃতি নয়াদিল্লির

নয়াদিল্লিঃ আন্তর্জাতিক রাজনীতির উত্তাল আবহে আগামী ১৫ অগস্ট আলাস্কায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। এই বৈঠককে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লির এই বার্তা শুধু শুভেচ্ছা নয়, বরং বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতের অবস্থানকে স্পষ্ট করে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে আয়োজিত এই বৈঠক ইউক্রেন সংকটের সমাধানে একটি সম্ভাব্য পথ খুলে দিতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অতীত মন্তব্য— “এটি যুদ্ধের সময় নয়”—এই বিবৃতিতে পুনরায় উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ, ভারত শান্তির পক্ষেই অবস্থান নিচ্ছে, এবং বৃহৎ শক্তিগুলির মধ্যে সংলাপকে উৎসাহ দিচ্ছে।

এই বিবৃতির তাৎপর্য আরও গভীর, কারণ আমেরিকার সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে টানাপড়েনের মধ্যে রয়েছে। রাশিয়া থেকে জ্বালানি ও অস্ত্র কেনার কারণে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের উপর শুল্ক বাড়িয়েছে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। এমনকি, বাণিজ্য আলোচনা বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর অভিযোগ—ভারতের সঙ্গে ব্যবসার মাধ্যমে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।

তবু নয়াদিল্লি স্পষ্ট করে দিয়েছে, দেশের স্বার্থে কোনও আপস করবে না ভারত। কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানিয়েছেন, ভারত এখন অনেক শক্তিশালী, এবং কোনও চাপের কাছে মাথা নত করবে না। এই অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে মোদীর সাম্প্রতিক ফোনালাপ। মোদী তাঁকে ‘বন্ধু’ বলে উল্লেখ করে জানিয়েছেন, ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক আরও মজবুত করার বিষয়ে তাঁরা একমত।

এই আবহে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের রাশিয়া সফরও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। পুতিনের সঙ্গে তাঁর বৈঠক এবং রাশিয়ার ফার্স্ট ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার ডেনিস মানতুরভের সঙ্গে সামরিক প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা—সব মিলিয়ে ভারত তার কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও দৃঢ় করছে।

About The Author