ভারতের ওপর চাপ দিয়ে আখেরে নিজেদেরই ক্ষতি করছেন ট্রাম্প, মত সাবেক উপদেষ্টার

ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিজের কৌশলগত স্বার্থকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে—মন্তব্য সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টনের। চীনকে ছাড় দিয়ে ভারতের উপর কঠোরতা ভবিষ্যতে বিপদ ডেকে আনতে পারে। এতে ভারত আরও কাছে যেতে পারে রাশিয়া ও চীনের। মার্কিন কূটনীতির দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ভারতের উপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁর প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন। তাঁর মতে, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের কৌশলগত প্রচেষ্টাকে বিপন্ন করছে—যার লক্ষ্য ছিল ভারতকে রাশিয়া ও চীনের প্রভাব থেকে দূরে রাখা।

বল্টন CNN-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “ভারতের উপর শাস্তিমূলক শুল্ক চাপিয়ে ট্রাম্প এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করছেন, যেখানে ভারত রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হতে পারে।” তিনি এটিকে “সবচেয়ে খারাপ ফলাফল” বলে অভিহিত করেছেন।

চীনকে তুলনামূলকভাবে ছাড় দেওয়া এবং ভারতের উপর ৫০%–এর বেশি শুল্ক চাপানো নিয়ে বল্টনের মন্তব্য—”এই দ্বৈত নীতি ভারতের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।”

মার্কিন বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফার প্যাডিলা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই শুল্ক ভবিষ্যতে ভারত–মার্কিন সম্পর্কের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। তাঁর মতে, এতে প্রশ্ন উঠতে পারে—যুক্তরাষ্ট্র কি আদৌ একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার?

NDTV-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বল্টন বলেন, এই শুল্ক ভারতের উপর “অন্যায্য ও অযৌক্তিক” এবং এর ফলে ভারত রাশিয়া ও চীনের আরও কাছাকাছি চলে যেতে পারে।

তিনি জানান, ট্রাম্প চীনের সঙ্গে সংযত আচরণ করলেও ভারতের উপর ৫০%–এর বেশি শুল্ক চাপিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে ২৫% “সেকেন্ডারি ট্যারিফ”—যা রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রে অর্থ জোগানোর অভিযোগে আরোপ করা হয়েছে।

বল্টনের মতে, এই দ্বৈত নীতি ভারতের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে, কারণ তারা দেখছে চীনকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, “এই শুল্ক রাশিয়াকে আঘাত করার বদলে ভারতকে রাশিয়া–চীনের সঙ্গে একত্রে যুক্ত হতে উৎসাহিত করতে পারে।”

ভারত ইতিমধ্যেই তার রুশ তেল আমদানি রক্ষা করেছে এবং এই শুল্ককে “অন্যায্য” বলে অভিহিত করেছে। মস্কোও ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে “অবৈধ বাণিজ্য চাপ” বলে অভিযোগ করেছে।

About The Author