Train Accident: কেউ নিলেন সেলফি, আর কেউ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে ‘হিরো’

রেল দুর্ঘটনার খবর পেয়ে অনেকেই গাড়ি ভাড়া করে ছুটে গিয়েছিলেন সেলফি তোলার জন্য। ট্রেনের সামনে ভিড় করে ছবি তুলে ফেসবুকে লাইভ দিয়ে লাইক কুড়িয়েছেন। তবে অন্যদিকে মানবিকতার ছবিও ধরা পড়ল এদিন।

ইদের সকাল শুরু হতে না হতেই বাড়ির পাশে এত বড় ঘটনা দেখে নামাজ শেষ না করেই সবার আগে ছুটে গিয়েছেন মহম্মদ রফিকেরা। বৃষ্টির মধ্যেই দুমড়ানো কামরা থেকে যথাসাধ্য নিজেরাই ধরাধরি করে একের পর এক, আহতদের উদ্ধার করলেন। তারপর একে একে এল পুলিশ, উদ্ধারকারী, নেতা মন্ত্রী আর বহু মানুষ।

বকরি-ইদের পুরো দিনটা উৎসবের উন্মাদনা ছেড়ে, দিনভর লেগে রইলেন আহতদের সেবায়। সকালে বাড়ির পাশে বড় ট্রেন দুর্ঘটনায় স্থানীয় নির্মল জোতে থমকে গিয়েছিল ইদের উৎসব। মানুষের বিপদে মানুষই তো এগিয়ে যাবে; স্থানীয় হিসেবে তাই পাশে এগিয়ে আসার ছবি দেখে প্রশংসায় ভরিয়েছে নেটপাড়া। অনেকেই তাঁদের হিরো বলেও অ্যাখ্যা দিয়েছে।

এলাকা জুড়ে এ দিন থমথমে ভাব। এলাকার কিছু পরিবার নিয়মরক্ষায় ইদ পালন করেছেন বলে জানান। সেই উৎসবে আনন্দ নেই। জাহির হুসেন, মহম্মদ রফিকেরা জানান, ‘‘দিনভর উদ্ধারকাজে ব্যস্ত ছিলাম। গা, হাত-পায়ে ব্যথা হয়েছে। বাড়ির পাশে এত বড় ঘটনা! শব্দ শুনে এসে দেখি, বগি একটার ওপর আরেকটা। এমন অবস্থায় কি আর উৎসব ভাল লাগে?’’ রফিক বলেন, ‘‘নিয়মরক্ষায় উৎসব হয়েছে। রাত জেগে ঘটনার ছবি মনে পড়ছিল।’’ রেল লাইনের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছেঁড়া রক্তাক্ত পোশাক, বাচ্চার জুতো দেখে মাঝেমধ্যেই শিউরে উঠছিলেন ওঁরা। চোখের সামনেই অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন। ছোট্ট শিশু কান্না করেছে বাবা মায়ের জন্য।

ফাঁসিদেওয়ার নির্মল জোতের রেল দুর্ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে ৪৮ ঘণ্টা। লাইনের ধারে এখনও ভেঙে পড়া কামরা, ইঞ্জিনের একাংশ, রেলের পুলিশকর্মীদের তৎপরতার মাঝে টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে থাকা সে সব জিনিসপত্র বেরিয়ে আসছিল। এ দিনও এলাকার মানুষের ভিড় ছিল দুর্ঘটনাস্থলে। নির্মল জোতে ইদের উৎসব থমকে গিয়েছিল এক লহমায়। স্থানীয়দের মধ্যে অনেকেরই কথায় ফিরে ফিরে আসছিল রক্তাক্ত সব মুখের কান্না, দুর্ঘটনায় পড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস থেকে বেরোতে না পারার যন্ত্রণার আর্তনাদ।