‘ভারতের মুসলিমদের নিয়ে কোনও সমস্যা নেই, সমস্যা মুখ্যমন্ত্রীর ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতিতে’: শুভেন্দু

শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ সফরে এসে ফের রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, কোচবিহার পুলিশ সুপারের দপ্তরে অভিযানের জন্য বিজেপির কর্মসূচি থাকলেও প্রশাসন অনুমতি দেয়নি।

পাশাপাশি বলেন, “ভারতের মুসলমানদের নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। সমস্যা তৈরি করছে মুখ্যমন্ত্রীর ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি।”

শুভেন্দুর দাবি, তৃণমূল কংগ্রেস ধর্মীয় বিভাজনের মাধ্যমে ভোটের সমীকরণ সাজাতে চাইছে। তাঁর বক্তব্য, “বাংলাদেশি মুসলমান অনুপ্রবেশকারীরা বাংলা ভাষা জানলেই তারা বাংলা ভাষার প্রতিনিধি হয়ে যায় না। ভাষা কোনো ইস্যু নয়, বিষয় হচ্ছে বৈধতা।”

তিনি স্পষ্ট করেন, বিজেপি হিন্দু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেবে, কিন্তু অনুপ্রবেশকারীদের ‘Pushback’-এর মাধ্যমে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। তাঁর মতে, “ভারতের মুসলমানদের নাগরিকত্ব নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। কিন্তু অনুপ্রবেশকারীদের বৈধতা নেই, এবং সেই ইস্যুকে ঘিরেই রাজ্য সরকার বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।”

এদিন, কোচবিহারে শুভেন্দু সফরে গেলেন। বিজেপির পরিকল্পনা ছিল, একাধিক বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করা। যদিও বিধায়ক বিশাল লামা ওই সময় সার্কিট বেঞ্চে থাকায় অভিযানে অংশ নিতে পারেননি।

শুভেন্দু বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে মর্যাদা রেখে কাজ করব, বাকিটা দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলবে। ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। সিপিআইএম-এর সুসময়ে লক্ষ্মণ শেঠকে হারিয়েছি, নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীকে হারিয়েছি, এবার ভবানীপুরেও হারাব।”

ছাত্র রাজনীতির প্রসঙ্গ তুলে তিনি দাবি করেন, “১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নিজেদের নামে চালিয়ে দিতে চাইছে।” পাশাপাশি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বলেন, “তারা শুধু বালি, পাথর, জঙ্গল, এমনকি জীবজন্তু পর্যন্ত খেয়ে ফেলেছে।”

উত্তরবঙ্গের প্রতি রাজ্য সরকারের ‘বিমাতৃসুলভ’ আচরণ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন শুভেন্দু। তাঁর অভিযোগ, “উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই উপাচার্য, মেডিকেল কলেজে নেই প্রিন্সিপাল। এর পেছনে মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট অনীহা কাজ করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গকে অপছন্দ করেন।”

তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “কল্যাণবাবু শিক্ষিত রাজনীতিক, ভাইপোর সঙ্গে তাঁর তুলনা চলে না। তৃণমূল এখন ভাইপোকেন্দ্রিক, অথচ ২০১১-র আগে কল্যাণবাবুর মতো নেতারাই দলটাকে তৈরি করেছিলেন।”

ভাষা ও নাগরিকত্ব ইস্যুতে সুর চড়িয়ে শুভেন্দু বলেন, “বাংলাদেশি মুসলমান অনুপ্রবেশকারীরা বাংলা ভাষা জানলেই তারা বাংলা ভাষার প্রতিনিধি হয়ে যায় না। ভাষা কোনো ইস্যু নয়, বিষয় হচ্ছে বৈধতা। হিন্দু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেবে বিজেপি, অনুপ্রবেশকারীদের পাঠানো হবে তাদের দেশে। Pushback চলবে।”

About The Author