টিফিন খরচ বাঁচিয়ে এক ‘অসহায় মা’কে সাহায্য স্কুল পড়ুয়াদের

রাজগঞ্জের ফাটাপুকুরের বাসিন্দা সান্তনা রায় সরকার তাঁর ১৪ বছর ছেলের কিডনি এবং হার্টের সমস্যা নিয়ে অথৈ জলে পড়েছেন। ছেলেকে বাঁচাতে অবিলম্বে চিকিৎসা করানো দরকার। তার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। ছেলের পাশে থাকতে একমাত্র সহায় হিসেবে সেই কাজ ছাড়তে হয়েছে।

RNF-এ সেই খবর প্রকাশিত হতেই ওই স্কুলের অন্তত ১৫০ জন পড়ুয়া সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ওই মহিলার পাশে এসে দাঁড়ালেন। ইতিমধ্যেই, ব্লক প্রশাসনের তরফে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও পেয়েছেন সান্তনা।

শুক্রবার সান্তনা রায় সরকারের বাড়িতে গিয়ে তাঁর হাতে সংগৃহীত অর্থ তুলে দিয়েছেন পড়ুয়ারা। ছাত্রদলের কথায়, অসহায় মহিলাকে সাহায্য করতে পেরে তারা খুব খুশি। পড়ুয়াদের তরফে দীপায়ন রায়, সমাদৃত নন্দী বলেন, তাদের স্কুলে একসময় ওই ‘কাকিমা’ নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। তার ছেলের মারাত্মক অসুখের কথা শুনে এবং অর্থের অভাবের কথা জানতে পেরে সকলে মিলে সামান্য কিছু সাহায্য করার চেষ্টা করেছে।

দীপায়ন আরও বলেন, সাহায্যের অর্থ জোগাড় করতে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে তাদের বাড়ির আশেপাশের এলাকায় অর্থ সংগ্রহ করেছে তারা। এছাড়াও তাদের অভিভাবকেরাও সাহায্য করেছেন। শুক্রবার সান্তনার বাড়িতে গিয়ে অর্থ সাহায্য তুলে দিয়েছেন সকলে।

সংগৃহীত অর্থ যৎসামান্য হলেও স্কুল ছাত্রদের এমন মানবিক উদ্যোগে খুশী সান্তনা। তবে ছেলের চিকিৎসা করাতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। এখনও সেরকম ব্যবস্থা না করতে পারায় কিভাবে ছেলেকে বাঁচাবেন সেই নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে। সান্তনা আরও বলেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হচ্ছিল না। দু’দিন আগেই হয়েছে।

জানা গিয়েছে, ব্লক প্রশাসনের তরফে সান্তনা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকেই সান্তনার নামে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করে দেওয়া হয়। এব্যাপারে রাজগঞ্জের বিডিও পঙ্কজ কোনার জানান, সমস্যা জানিয়েছিল। সেইমত আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।

যদিও ছেলের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রচুর অর্থ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিলেও উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের ছেলের চিকিৎসা হবে না বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসক। ভালো চিকিৎসা করাতে দক্ষিণের কোনও হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে বলে ভেবে দুশ্চিন্তায় রয়েছে সান্তনা।

About The Author