SSC Verdict: চাকরি বাতিলের তালিকায় প্রচুর নাম রাজগঞ্জ ব্লকেও, দেখুন তালিকা

জলপাইগুড়ি: প্রধান বিচারপতির কলমের খোঁচায় চাকরি বাতিল প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার। হাইকোর্টের রায় বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৬ সালে ‘নিয়োগ প্রক্রিয়ার কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা’ না পেয়ে পুরো প্যানেল বাতিল করলেন বিচারপতি। এই রায় সামনে আসার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাহাকার। ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় জেলায় স্কুলগুলিতে চরম হতাশার ছবি। একই অবস্থা জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকেও।

গোটা রাজ্যের পাশাপাশি জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকেও উল্লেখযোগ্য স্কুলগুলিতে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিলের তালিকায় নাম রয়েছে। এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক সেই তালিকা। শিক্ষকমহল এবং স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী,

  • রাজগঞ্জ বন্দর গার্লস হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার নাম চাকরি বাতিলের তালিকায়। ওই স্কুল থেকে একমাত্র তাঁর নামই রয়েছে বলে জানা গেল।
  • বেলাকোবা গার্লস হাইস্কুলে ১৫ জন শিক্ষিকার মধ্যে বাতিল ৩ জন শিক্ষিকা এবং একজন গ্রুপ ডি-র কর্মী।
  • গুলুকান্ত হাইস্কুলে ১৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে ৫ জনের নাম বাতিলের তালিকায়।
  • বেলাকোবার মুদিপাড়ার নগেন্দ্রনাথ হাইস্কুলে মোট শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ২৩। এদের মধ্যে ২ জনের নাম বাতিল হয়েছে বলে খবর।
  • কেবলপাড়া হাইস্কুলে মোট শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ৩১। এদের মধ্যে বাতিল ৩ জন।
  • রাজগঞ্জ মহেন্দ্রনাথ হাইস্কুলে ২৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে ৫ জন শিক্ষক এবং একজন গ্রুপ ডি-র কর্মীর নাম বাদ গিয়েছে বলে জানা গেল।
  • রাজগঞ্জ প্রধানপাড়া গমিরুদ্দিন হাইস্কুলের ২০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে ৪ জনের নাম বাতিলের তালিকায়।
  • রাজগঞ্জ সন্ন্যাসীকাটা হাইস্কুলের প্রায় ৪০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে ৯ জনের নাম চাকরি বাতিলের তালিকায়।
  • রাজগঞ্জের ফাটাপুকুর সারদামণি হাইস্কুলের এক শিক্ষিকা।
  • রাজগঞ্জের কুকুরজান হাইস্কুলের একজন শিক্ষক।
  • কুকুরজান গার্লস হাইস্কুলের ২ জন শিক্ষিকার নাম রয়েছে বাতিলের তালিকায়
  • রাজগঞ্জের হরিহর হাইস্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে কাজ পেয়েছিলেন শিলিগুড়ির অনামিকা রায়। তাঁরও যোগ্যতা প্রমাণ হল না। চাকরি খুইয়ে দিশেহারা তিনি।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য, এর ফলে পঠন-পাঠনে প্রচন্ড সমস্যা হবে। বাতিলের তালিকায় নাম রয়েছে, তাঁদের অনেকেই ভালো পড়াতেন। যদিও এখনই ডিআই থেকে এই ব্যাপারে কোনও নির্দেশিকা এখনও তাঁদের হাতে এসে পৌঁছায়নি।

২০১৬ সালের এসএসসিতে নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ পুরো প্যানেল বাতিলের রায় দিয়ে বলেন, পুরো প্রক্রিয়ায় কারচুপি করা হয়েছে। ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ার কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।

সেই সঙ্গে রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল করে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানিয়েছে, তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, যাঁরা অন্য সরকারি চাকরি ছেড়ে ২০১৬ সালের এসএসসির মাধ্যমে স্কুলের চাকরিতে যোগদান করেছিলেন, তাঁরা চাইলে পুরনো কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারবেন।

বেতনের টাকা ফেরাতে হবে অযোগ্য শিক্ষকদের। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ সুদের হারে বেতন ফেরত দিতে হবে। বাতিল শিক্ষকদের আবারও পরীক্ষায় বসতে হবে। তবে অযোগ্যরা সেই সুযোগ পাবেন না।

২০১৬ সালের এসএসসি মামলায় ২৬,০০০ চাকরিতে কারা যোগ্য কারা অযোগ্য তা নির্ণয় করতে পারছিল না সুপ্রিম কোর্ট। নিয়োগ প্রক্রিয়া ভুল ছিল। তাই আগামী তিন মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ করতে হবে।

২০১৬ সালের এসএসসি-তে চাকরি পাওয়া ১৮ জন দৃষ্টিহীনেরও চাকরি বাতিল হয়েছে। মূল মামলাকারীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বলেন, শুধুমাত্র ইনসার্ভিস শিক্ষকেরা স্বস্তি পেয়েছে। বেতন ফেরত দিতে হবে চিহ্নিত অযোগ্য চাকরি প্রাপকদের৷ আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ সুদের হারে বেতন ফেরত দিতে হবে।

About The Author