‘ট্রাম্পের শুল্ক-নিষেধাজ্ঞা ইতিহাসের গতিপথ বদলাতে পারবে না’, ভারতের ওপর চোটপাটের জবাব দিল রাশিয়া

মস্কো: শুল্ক-নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইতিহাসের ধারা থামানো যাবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির জবাবে মস্কো জানাল এই কথা।

ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, ভারত রাশিয়া থেকে ‘বিপুল পরিমাণে তেল’ কিনছে এবং তা ‘বাজারে বিক্রি করে লাভ করছে’, তাই ভারতের উপর শুল্ক ‘বেশি’ করা হবে। এর জবাবে ভারত বলেছে, ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রই উৎসাহ দিয়েছিল।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, “আমাদের আমদানি বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতির বাধ্যবাধকতা। যারা আমাদের সমালোচনা করছে, তারাই রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করছে—যেখানে তাদের এমন বাধ্যতা নেই।”

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘নব্য ঔপনিবেশিক’ নীতি অনুসরণের অভিযোগ তুলেছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করছে, বিশেষ করে সেইসব দেশের উপর যারা আন্তর্জাতিক মঞ্চে স্বাধীন অবস্থান নিচ্ছে।”

জাখারোভা বলেন, “শুল্ক যুদ্ধ কিংবা একতরফা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইতিহাসের স্বাভাবিক গতিপথ থামানো যাবে না। আমরা BRICS-সহ বহু সহযোগী দেশের সমর্থন পাচ্ছি, যারা বহুপাক্ষিক ও সমতাভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থার পক্ষে।”

BRICS জোটে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ২০২৫ সালে ইন্দোনেশিয়া। এই সম্প্রসারণকে রাশিয়া দেখছে একটি ‘প্রাকৃতিক ঐতিহাসিক অগ্রগতি’ হিসেবে।

জাখারোভা আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে, সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিকে খণ্ডিত করছে। পশ্চিমা দেশগুলো এক সময় মুক্ত বাণিজ্যের কথা বললেও এখন তারা রাজনৈতিক স্বার্থে শুল্ক দেয়াল তুলছে।”

রাশিয়া ও ভারতের এই অবস্থান বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যেখানে Global South দেশগুলো পশ্চিমা প্রভাবের বাইরে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে চাইছে।

About The Author