রাজগঞ্জে তর্পণের দীর্ঘ ৩৫ বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন যারা

মহালয়া মানেই, পিতৃপক্ষের অবসানে দেবীপক্ষের সূচনা। এদিন সকাল থেকেই নদীর ঘাটে তর্পণ করতে ভিড় জমান মানুষেরা। শাস্ত্র অনুযায়ী দেবীপক্ষের আগের কৃষ্ণা প্রতিপদে মর্ত্যধামে নেমে আসেন পিতৃপুরুষেরা। উত্তরসূরিদের কাছ থেকে জল পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন। মহালয়ার দিন পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে জলদান করাই হল তর্পণ।

রাজগঞ্জে দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে তর্পণের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন সুভাষপল্লীর বাসিন্দারা। বুধবার করতোয়া নদীর ঘাটে প্রায় ৪০ জন তর্পণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন। এই অনুষ্ঠানের অন্যতম মূল উদ্যোক্তা স্থানীয় ঝাঁ পরিবার। সেই পরিবারের একজন অন্যতম সদস্য বিনয় ভূষণ ঝাঁ জানান, পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে যে কেউ তর্পণ করতে পারেন। এই চিন্তাধারা বজায় রেখে রাজগঞ্জের সকলকে এই মহৎ কাজে উৎসাহ দিয়ে আসছেন তারা। দিনটির ঐতিহ্য ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, মহালয়ার দিন তর্পণ করলে পূর্ব পুরুষেরা তৃপ্ত হন এবং উত্তরসূরিদের আশীর্বাদ করেন।

রাজগঞ্জের সুভাষপল্লি ঝা-বাড়ির সদস্য তথা লেখক ও সমাজসেবক বিশ্বজিৎ ঝাঁ জানান, এই কাজে মহিলারাও অংশ নিচ্ছেন। পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে জল দান করাই তর্পণের প্রধান উদ্দেশ্য। এদিন সকালে ছিটেফোঁটা বৃষ্টির মধ্যেই তর্পণ সারেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

বর্তমান সময়ে ব্যস্ততার যুগে এবং আধুনিকতার ছোঁওয়ায় অন্য সব নিয়ম-নিষ্ঠার মত তর্পণের গুরুত্বও যেন লোপ পাচ্ছে। যুগযুগ ধরে চলা তর্পণের ঐতিহ্য ধরা রাখতে এমন উদ্যোগ। আগে যেখানে ১৪ পুরুষের নাম মনে রাখতে হত, সেখানে আজ ৩ পুরুষের নাম মনে করতেও হিমসিম খেতে হয় অনেককেই। এমন অভিযোগ নতুন কিছু নয়।

About The Author