ছেলে নদীর মাছ খেতে চেয়েছিল; আবদার মেটাতে বাজারে মাছ নিয়ে বাড়ি ফিরে এসে দেখেন ছেলের ঝুলন্ত দেহ। মাথার ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়ে রেখা দেবীর। ২৩ বর্ষীয় এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে রাজগঞ্জের সুখানি অঞ্চলের তেলিপাড়া এলাকায় শোকের ছায়া।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম দিপক রায় (২৩)। পরিবারের সকলেই দিনমজুরির কাজ করেন। গত সরস্বতী পুজোয় বাইক দুর্ঘটনায় মাথায় চোট লাগে। এরপর থেকেই ব্যবহারে পরিবর্তন দেখতে পান সকলেই। মৃতের মা রেখা জানান, আগে নেশার আসক্তি ছিল দিপকের। যদিও পড়ে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পেরেছিল।
মৃতের এক আত্মীয় জানান, দিপকের নেশার আসক্তি ছিল। সম্ভবত দীর্ঘদিন ধরে নেশা না করতে পেরে মানসিক অবসাদে ভুগছিল সে। যদিও দিপকের মায়ের দাবি, নেশার আসক্তি থাকলেও এখন তা সে পর্যায়ে নেই। এদিকে মাথায় চোট লাগার পর ব্যবহারেও ভয়াবহ পরিবর্তন আসে। রবিবার বিকেলে ফাঁকা বাড়িতেই গলায় দড়ি দেয় দিপক। ঘটনার সময় বাড়িতে কেউ ছিলেন না। ঠিক কি কারণে এমন ঘটনা তা বলতে পারছেন না তিনি।
রেখা রায় আরও জানান, ছেলে দুপুরে নদীর মাছ খাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে। সেইমত দুপুরে ছেলের আবদার মেটাতে বাজারে গিয়েছিলেন। মাকে কিছুটা এগিয়েও দেয় দিপক। প্রায় আধঘণ্টা বাদে বাড়িতে ফিরে এসে দেখতে পান, দিপক গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ বাড়িতে আসে। দেহ ময়নাতদন্তের পর সোমবার বিকেলে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
দিপকের বাবা মদন রায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। মা রেখাও রাজগঞ্জ বাজারে একটি মেডিক্যাল স্টোরে কাজ করেন। ছোট ছেলে কাজের সূত্রে ভিন রাজ্যে রয়েছেন। এই খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে আসার কথা রয়েছে তার। অন্যদিকে, পরিবারে আর্থিক দুর্বলতার ছাপ স্পষ্ট। রেখা জানান, দীর্ঘ ২২ বছর ধরে এখানে রয়েছেন, তবে র্যাশন সামগ্রী ছাড়া অন্য কোনও সরকারি সুবিধা মেলেনি। তাছাড়া ছেলের দুর্ঘটনার পর তাকে সুস্থ করে তুলতেও বেশ খরচ হয়েছিল। ছেলে সেরেও উঠেছিল কিন্তু হঠাৎ করে সব এলোমেলো হয়ে যাবে তা ভাবতে পারেননি।