ছেলেকে বাঁচাতে দিশেহারা ‘কাজ হারানো’ বিধবা মা, সাহায্যের আবেদন

রাজগঞ্জ: দু’বেলার খাবার জোগাড় করতে স্কুলে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন বিধবা মা। এদিকে অভাবের সংসারে ছেলের কিডনি বিকল হয়ে সংক্রমণ ছড়িয়েছে হার্টেও। অবিলম্বে অস্ত্রপচার না করা হলে ছেলের বাঁচার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে নিরাপত্তারক্ষীর কাজও হারিয়েছেন। চিন্তায় তাই রাতের ঘুম উড়েছে অসহায় মায়ের।

জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের পানিকাউরি অঞ্চলের ফাটাপুকুরের বাসিন্দা সান্তনা রায় সরকার তিন ছেলেকে নিয়ে কোনওরকমে দিন কাটাচ্ছেন। স্বামী মারা গিয়েছে চার বছর আগে। তারপর থেকে বাপের বাড়িতে এক কোনে পড়ে থাকেন তিন ছেলেকে নিয়ে। এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করে কোনওমতে অভাবের সংসার চালাচ্ছিলেন সান্ত্বনা। বর্তমানে ছেলেকে বাঁচাতে রোজ একটি করে ইঞ্জেকশন নিতে দৌড়াতে হয় হাসপাতালে। তাই সেই কাজও এখন আর নেই। বিধবা ভাতা পেলেও অভাবের সংসারের তেষ্টা মেটাতে তা যেন একবিন্দু জল। ছেলের চিকিৎসার কথা তো ছেড়েই দিন।

সান্তনার মেজো ছেলে অর্ঘ্য রায় (১৪) ক্লাস নাইনের ছাত্র। কিডনি এবং হার্ট ইনফেকশনের সমস্যা ধরা পড়েছে। অবিলম্বে অপারেশন না করা হলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে পুরো শরীরে। দ্রুত চিকিৎসা না হলে ছেলেকে বাঁচানো সম্ভব হবেনা বলে জানিয়েছেন সান্তনা। তাঁর কথায়, ছেলে জন্ম থেকেই একটিমাত্র কিডনির ওপর ভরসা করে বেঁচে আছে। কয়েক মাস ধরে সমস্যা তীব্রতর হচ্ছে। ডাক্তারবাবুর কথায় ইনফেকশন কিডনি থেকে ছড়িয়ে হার্টে পৌঁছেছে। অবিলম্বে চিকিৎসা না করাতে পারলে ছেলেকে বাঁচানো যাবে না।

এদিকে দুয়ারে সরকারে একাধিকবার আবেদন করেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হয়নি বলে অভিযোগ। বিগত কয়েকদিনে ছেলের চিকিৎসার সাহায্যের জন্য প্রশাসনের দরজায় কড়া নেড়েছেন সান্তনা। স্থানীয় প্রধান থেকে শুরু করে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাপতির উত্তরা বর্মন সব শুনে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এখনও সাহায্য মেলেনি। একেতে অভাবের সংসার তার ওপর ছেলের মারাত্মক সমস্যা। কিভাবে কি করবেন বুঝেই উঠতে পারছেন না তিনি। এই মুহূর্তে সকলের কাছে ছেলের চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়েছেন সান্তনা।

About The Author