ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার প্রথমবার ভারত সফরে; খালিস্তান, বাণিজ্য ছাড়াও আর কি আলোচনা হল?

“বন্ধুত্বের পথে”—একই গাড়িতে মোদী ও কেয়ার স্টারমার, ভারত-ব্রিটেন সম্পর্কের উষ্ণ বার্তা! বৈঠকের পাশাপাশি অরিজিৎ সিংহ আর এড শিরানের ‘স্যাফায়ার’ও শোনেন দুই প্রধানমন্ত্রী। #Modi #KierStarmer

মুম্বই: বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে গ্লোবাল ফিনটেক ফেস্ট ২০২৫-এ যোগ দিতে যাওয়ার পথে এক গাড়িতে সফর করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার।

ভারত সফরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার, আলোচনায় খালিস্তান, বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও সাংস্কৃতিক বন্ধন

মুম্বইয়ে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল ফিনটেক ফেস্ট ২০২৫-এ যোগ দিতে এসে প্রথমবারের মতো ভারত সফর করলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার। এই সফরকে ঘিরে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায় রচিত হল।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠকে স্টারমার আলোচনা করেন ভারত-ব্রিটেন ‘Vision 2035’ রোডম্যাপ নিয়ে, যার মূল লক্ষ্য দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা। আলোচনায় উঠে আসে বাণিজ্য, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা, জলবায়ু, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের সহযোগিতা।

বিশেষভাবে গুরুত্ব পায় ভারত-ব্রিটেন বিস্তৃত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য চুক্তি (CETA), যার দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান স্টারমার। তিনি বলেন, এই চুক্তি দুই দেশের বাজারে প্রবেশাধিকারে সুবিধা এনে দেবে এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে।

প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা আসে—ব্রিটেনের Thales সংস্থা ভারতীয় সেনার জন্য ৪৬৮ মিলিয়ন ডলারের মাল্টিরোল ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করবে, যা তৈরি হবে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে।

শিক্ষা ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগ হিসেবে বেঙ্গালুরুতে Lancaster University-র নতুন ক্যাম্পাস এবং গুজরাটের GIFT City-তে University of Surrey-র AI ও সাইবারসিকিউরিটি কোর্স চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ক্ষেত্রেও এই সফর ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। যশরাজ ফিল্মস স্টুডিওতে স্টারমারকে স্বাগত জানান রানি মুখোপাধ্যায়। সেখানে তিনি উপভোগ করেন অরিজিৎ সিংহ ও এড শিরানের যুগলবন্দি গান ‘স্যাফায়ার’-এর একটি ভারতীয় ধ্রুপদী পরিবেশনা। মোদী নিজেই সেই ভিডিও শেয়ার করে লেখেন, “এটি ভারত-ব্রিটেন সাংস্কৃতিক অংশীদারিত্বের এক দুর্দান্ত উদাহরণ।”

তবে এই সফরে শুধু বন্ধুত্বের বার্তা নয়, নিরাপত্তা উদ্বেগও উঠে আসে। ভারতের তরফে খালিস্তানপন্থী কার্যকলাপ নিয়ে সরাসরি উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ব্রিটেন আশ্বাস দেয়, তারা ভারতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

দুই নেতা একসঙ্গে পাহালগাম জঙ্গি হামলার নিন্দা করেন এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যৌথ পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দেন। স্টারমার বলেন, “আমরা একসঙ্গে এগোচ্ছি, ভবিষ্যতের সুযোগকে সামনে রেখে।”

About The Author