দুই বছর পর মণিপুরে মোদী, উন্নয়ন প্রকল্পে জোর! সহিংসতার মাঝে শান্তির বার্তা

ইম্ফল: দীর্ঘ ২৮ মাস পর সহিংসতায় বিধ্বস্ত মণিপুরের মাটিতে পা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০২৩ সালের মে মাসে কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত সংঘর্ষে ২৬০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয় এবং হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। সেই ঘটনার পর এই প্রথমবার রাজ্যে এলেন প্রধানমন্ত্রী, যা রাজনৈতিক ও মানবিক দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

শনিবার দুপুরে মিজোরামের আইজল থেকে বিমানে ইম্ফলে পৌঁছন মোদী। প্রবল বৃষ্টির কারণে হেলিকপ্টারে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে তিনি সড়কপথে রওনা দেন কুকি অধ্যুষিত চুরাচান্দপুর জেলার সদর শহরের দিকে।

চুরাচান্দপুরে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী ₹৭,৩০০ কোটি টাকার একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর মধ্যে রয়েছে Manipur Urban Roads, drainage and asset management improvement project (₹৩,৬৪৭ কোটি), Manipur Infotech Development (MIND) প্রকল্প (₹৫৫০ কোটি), এবং নারী কর্মীদের জন্য হোস্টেল নির্মাণের পরিকল্পনা।

এরপর ইম্ফলে গিয়ে তিনি উদ্বোধন করেন ₹১,২০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প, যার মধ্যে রয়েছে নতুন পুলিশ সদর দপ্তর (₹১০১ কোটি), সিভিল সচিবালয় (₹৫৩৮ কোটি), আইটি SEZ বিল্ডিং, Manipur Bhawans (দিল্লি ও কলকাতা), এবং Ima Markets—একটি অনন্য অল-উইমেন বাজার যা চারটি জেলায় বিস্তৃত।

প্রধানমন্ত্রী স্থানীয়ভাবে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করেন, তাঁদের দুঃখ-কষ্টের কথা শোনেন এবং শান্তির বার্তা দেন। চুরাচান্দপুরের বাসিন্দা ন্যান্সি বলেন, “প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীকে সামনে থেকে দেখতে পারব, এটা আমার জীবনের সৌভাগ্য”।

তবে এই সফরকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কও কম হয়নি। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ অভিযোগ করেন, “প্রধানমন্ত্রী মাত্র তিন ঘণ্টা সময় দিচ্ছেন মণিপুরকে। এটা শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা নয়, বরং এক প্রহসন”। অন্যদিকে রাজ্যসভার একমাত্র মণিপুর প্রতিনিধি লেইশেম্বা সানাজাওবা বলেন, “এই সফর রাজ্যের জন্য অত্যন্ত সৌভাগ্যজনক”।

মোদীর এই সফর উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়ন ও সংহতির বার্তা বহন করছে। তবে বাস্তবিক শান্তি ও পুনর্গঠনের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণই হবে মূল চাবিকাঠি।

About The Author