Rajganj: টোটোয় দড়ি বাঁধা, কালভার্টে‌র নিচে ঝুলছে নাবালকের দেহ

কাকভোরে ফাঁকা রাস্তা। কালভার্টে‌র ওপর একটি টোটো দাঁড়িয়ে। প্রাতর্ভ্রমণে বেড়িয়ে পাশ দিয়ে চলেছেন অনেকেই। তাদেরই একজন খেয়াল করলেন টোটোর একদিকে দড়ি বাঁধা। এগিয়ে যেতেই কালভার্টে‌র নিচের দৃশ্য দেখে শিউরে উঠলেন স্থানীয়রা। টোটোর একপাশে বাঁধা নাইলনের দড়ি শেষপ্রান্তে কালভার্টের নিচে ঝুলে রয়েছে এক কিশোর। সোমবার সাতসকালে রাজগঞ্জের মাঝিয়ালি এলাকায় ফাঁকা রাস্তায় কালভার্টে‌র নিচে এক নাবালকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। আত্মহত্যা না খুন? তৈরি হয়েছে রহস্য। জানা গিয়েছে, মৃতের নাম শাহের আলি (১৭)। তাঁর বাড়ি রাজগঞ্জের স্কুলপাড়ায়। 

অভাবের সংসারে ৯ জনের পেট চালাতে নাবালকের বাবা এবং সে নিজে টোটো চালাত। বাবা জয়নাল হক ক’দিন ধরে অসুস্থ থাকায় শাহেরই টোটো চালাচ্ছিল। গতকাল সকালে বেড়িয়ে সারাদিন আর বাড়ি ফেরেনি কিশোর। সোমবার ভোরের আলো ফুটতেই এমন ঘটনা সামনে এল। মাঝিয়ালি অঞ্চলের গ্রামবাসীরা দৃশ্য দেখে থ! খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পরিবারের লোকেরা। বাড়ির বড় ছেলের এমন দশা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন স্বজনরা।

বাবা জয়নাল হক জানান, শাহের আলি বড়। তাঁর এক ভাই এবং বোন রয়েছে। অভাবের সংসারে কারও পড়া শেষ হয়নি। ছোট ছেলে গ্যারেজে কাজ করে। নিজেকে শেষ করার মত কোনও ঘটনা ঘটেনি। অভাব ছিল তবে তা এমন পরিণতির কারণ হতে পারে না। দাদু জসিমুদ্দিন মহঃ জানায়, প্রায় দেড় বছর ধরে টোটো চালাত সাহের। পরিবারের কম বেশি সবাই দিনমজুরি করেন। টোটো চালাত পিতা-পুত্র দুজনই। এদিন সকালে এসে দেখতে পান শাহের রাস্তার ওপর টোটো দাড় করিয়ে সেখানে দড়ি বেধে কালভার্টে‌র তলায় ঝুলে রয়েছে। কারণ বুঝে উঠতে পারছেন না তারা।

স্থানীয়দের দাবি, রবিবার সন্ধ্যায় টোটো নিয়ে ওই কালভার্টের ওপর শাহেরকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। পরদিন ভোরের আলো ফুটতেই দেখা যায় টোটো দাড়িয়েই আছে, কিন্তু আশে পাশে কেউ নেই। পড়ে নিচে চোখ পড়তেই শিউরে ওঠেন এলাকাবাসীরা। দড়ি বেঁধে কালভার্টের নিচে ঝুলছে নাবালক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় রাজগঞ্জ থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। মৃতের আত্মীয়দের কয়েকজনের দাবি, এই ঘটনা খুন হতেও পারে। হয়ত কাউকে সঙ্গে নিয়ে এখানে এসেছিল কিশোর। পড়ে রাতে এই ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়েছে। যদিও তা হলেও খুনের কারণ কিছুই দেখছেন না তাঁরা। 

About The Author