বিপর্যয়ের আগেই কুকুরের সতর্কতা: ৬৭ জনের প্রাণ বাঁচাল পোষ্য ‘রকি’

মাণ্ডি: বিপর্যস্ত হিমাচলপ্রদেশের একটি গ্রামে সম্প্রতি এক অভাবনীয় ঘটনা ঘটেছে। প্রবল বর্ষণের রাতে ভয়াবহ ভূমিধস গ্রাস করে নেয় গ্রামটির বড় একটি অংশ, কিন্তু ঠিক তার আগের মুহূর্তে শুধুমাত্র একটি পোষা কুকুরের ডাক শুনে আগাম সতর্কতায় প্রাণ বাঁচল ওই গ্রামের অন্তত ৬৭ জনের।

ঘটনাটি ঘটেছে ৩০ জুনের রাতে, যখন প্রায় সমস্ত বাসিন্দাই গভীর ঘুমে ছিলেন। গ্রামের এক বাসিন্দা নরেন্দ্রর পোষা কুকুর ‘রকি’ রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ অস্বাভাবিকভাবে ডাকতে শুরু করে। আচমকা এমন শব্দে নরেন্দ্রর ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম থেকে উঠে তিনি বুঝতে পারেন, ঘরের ভেতরে জল ঢুকতে শুরু করেছে। বাইরে গিয়ে তিনি দেখতে পান, পাহাড় থেকে ধসে পড়া কাদামাটি এবং জল গ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে। তিনি আর দেরি না করে নিজের পরিবারের সবাইকে জাগান এবং প্রতিবেশীদেরও সতর্ক করে দেন।

সময়ের ব্যবধান ছিল মাত্র কয়েক মিনিট। সবাই বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার পরেই ধসে পড়ে গোটা বসতির একটা বড় অংশ। অন্তত দশটি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি এখন পাশের ত্রিয়ম্বলা গ্রামের নৈনা দেবী মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছেন।

সিয়াথির এই ঘটনার পর গোটা হিমাচল জুড়েই পোষা কুকুর ‘রকি’র কথা আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। তার সতর্কতামূলক আচরণ বাচিয়ে দিল ৬৭ জনের প্রাণ।

হিমাচল প্রদেশের সরকার তড়িঘড়ি করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ১০,০০০ করে জরুরি অর্থ সাহায্য দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দারাও খাদ্য, পোশাক ও আশ্রয়ের জন্য এগিয়ে এসেছেন। মানবিকতা ও সহমর্মিতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তাঁরা।

এই বছরের ২০ জুন থেকে শুরু হওয়া বর্ষায় হিমাচল প্রদেশে এখনও পর্যন্ত ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ জনের প্রাণ গেছে ভূমিধস, বন্যা ও ক্লাউডবার্স্টের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হল মাণ্ডি, যেখানে একাধিক রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে এবং বহু গবাদি পশু মারা গেছে।

About The Author