নাইট ডিউটি চলাকালীন চিকিৎসক-নার্সকে হুমকি-মারধর, গ্রেপ্তার TMC নেতা

মালদা: গ্রামীণ হাসপাতালে নাইট ডিউটিতে কর্তব্যরত ডাক্তার এবং নার্সদেরকে বেধড়ক মার তৃণমূল নেতার! দেওয়া হলো খুনের হুমকি। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী। গ্রেপ্তার অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা।

আরজিকর কাণ্ড ঘটনার প্রতিবাদ মিছিলে মন্ত্রীর সঙ্গে হাঁটতে দেখা গিয়েছে অভিযুক্ত নেতাকে। রাতে হাসপাতালে গিয়ে হামলার অভিযোগ তার বিরুদ্ধেই।

সম্প্রতি কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঘটে গিয়েছে এক মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং নারকীয় হত্যাকাণ্ড। আর এই ঘটনার জেরে গোটা বাংলা জুড়ে হাসপাতালে ডাক্তার এবং নার্সদের রাত্রিকালীন ডিউটি তে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর এই অবস্থায় মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে রবিবার রাত্রিকালীন ডিউটি চলার সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক এবং নার্সদের ওপর হামলা চালালো এলাকার তৃণমূলের এক নেতা।

অভিযোগ, অভিনাশ দাস নামে ওই নেতা হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে মঙ্গলবার রাত্রি এগারোটা নাগাদ নার্সিং স্টেশনে ঢুকে হঠাৎ করে কর্তব্যরত নার্সদের দিকে অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করেন। অশ্রাব্য গালিগালাজ শুরু করেন নার্সদেরকে। এমনকি সেখানে উপস্থিত মেডিকেল অফিসার প্রভাকর সাহা, ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

পাশাপাশি উপস্থিত নার্সদেরকে খুনের হুমকি দেন ওই নেতা। আরো অভিযোগ নার্সদের দিকে তিনি শারীরিক নিগ্রহ করতে তেড়ে যান। যদিও সেখানে উপস্থিত চিকিৎসক এবং জিডিএ কর্মীরা ওই নেতা কে আটকে দেন। এরপরই খবর দেওয়া হয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানায়। ঘটনার খবর পেয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঙ্গে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনা স্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেন। আর এই ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালেও চিকিৎসক স্বাস্থ্য-কর্মীদের কোন নিরাপত্তা নেই। আতঙ্কে রয়েছেন নার্স ও চিকিৎসকরা।

ইতিমধ্যেই হাসপাতালের পক্ষ থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রভাকর সাহা বলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি এক রোগীর খোঁজ করতে এসে আমার সঙ্গে অশালীন ভাষায় কথা বলতে শুরু করেন। উপস্থিত নার্সদেরকেও অস্ত্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি এর প্রতিবাদ করলে আমাকে মারধর করা হয়। এরপর সেখানে উপস্থিত নার্সদেরকেও তিনি মারতে যান। আমরা তাতে বাধা দি। এরপরই ওই ব্যক্তি আমাদেরকে খুনের হুমকি দেয়। আমরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।

প্রসঙ্গত অভিনাশ দাস নামে ওই তৃণমূল নেতা কে হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী এবং হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীন হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তাজমুল হোসেনের সঙ্গে আরজিকর কাণ্ড ঘটনার প্রতিবাদ মিছিলে এক সঙ্গে হাঁটতে দেখা গিয়েছে।

যদিও অন্যদিকে তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির সাফাই দলের কেউ না অভিযুক্ত। আইন আইনের পথেই চলবে বলে সাফাই দিয়ে ১৮০° ঘুরে গেলেন। আর এতেই সরব হয়েছেন এলাকার বিরোধীরাও। তাদের দাবি এলাকায় শাসক দলের মাস্তানদের পিছনে দলের মন্ত্রীর হাত রয়েছে। অবিলম্বে ওই নেতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন এলাকার বিরোধীরা। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকায় জুড়ে।