কলকাতা: মহালয়ার সকালে বাঙালির ঘরে ঘরে বেজে ওঠে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ। সেই সঙ্গে চোখে ভাসে এক চেনা মুখ—দূরদর্শনের পর্দায় দেবী দুর্গার রূপে সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৯৪ সালে প্রথমবার টেলিভিশনে দুর্গার বিভিন্ন রূপে দর্শকদের সামনে আসেন তিনি। তাঁর অভিনয়, অভিব্যক্তি, এবং শরীরী ভাষা এতটাই প্রাণবন্ত ছিল যে, পর্দায় তাঁকে দেখলেই পুজোর আগমনী বার্তা অনুভব করত দর্শক।
তাঁর মহিষাসুরমর্দিনী রূপ আজও বাঙালির মনে গেঁথে আছে। ২০১৪ সালে শেষবারের মতো দুর্গা রূপে দেখা গিয়েছিল সংযুক্তাকে। বর্তমানে তিনি কানাডায় বসবাস করছেন, পরিবারের সঙ্গে। সেখানেই রয়েছে তাঁর নিজস্ব নৃত্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পুজোর সময় তাঁর ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে কানাডা ও আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠান করেন তিনি।
সংযুক্তার অভিনয় জীবনের শুরু হয়েছিল কলেজে পড়াকালীন। প্রথম বর্ষের ছাত্রী থাকাকালীনই পরিচালক-প্রযোজকের নজরে পড়েন তিনি। এরপর চলে দীর্ঘ রিহার্সাল, ওয়ার্কশপ, এবং কঠিন পরিশ্রম। ফাইট মাস্টারের তত্ত্বাবধানে শিখেছিলেন ত্রিশূল, চক্র, ও মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধের ভঙ্গিমা। সেই প্রস্তুতির ফলেই পর্দায় তাঁর দুর্গা রূপ হয়ে উঠেছিল এতটা বিশ্বাসযোগ্য।
যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তি ও চিত্রনাট্যে এসেছে পরিবর্তন, সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মহালয়ার সেই রূপ আজও দর্শকের হৃদয়ে অমলিন। তাঁর অভিনয় যেন এক আবেগ, এক স্মৃতি, যা মহালয়ার সকালে বাঙালির মনে জাগিয়ে তোলে এক অনন্য অনুভূতি।