পাকিস্তানের বুকে জাগ্রত মা কালী! ২০০০ বছর ধরে বালোচ মুসলিমদের হাতেই রক্ষণাবেক্ষণ

ডেস্ক রিপোর্ট: পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশের কালাট শহরে অবস্থিত মা কালাটেশ্বরীর মন্দির যেন ইতিহাসের এক জীবন্ত নিদর্শন।

প্রায় দু’হাজার বছর ধরে এই ভূখণ্ডে বিরাজ করছেন রণচণ্ডী কালীমাতা। মন্দিরের দ্বারে উর্দু ভাষায় লেখা আছে—স্থাপিত হয়েছিল ৭৪ খ্রিস্টাব্দে। 

মন্দিরের ভেতরে রয়েছে দশভূজা দেবীর বিশাল বিগ্রহ, যার গলায় আসল নর করোটির মালা, হাতে গদা, তরবারি, ত্রিশূল, খড়গ, চক্রসহ রণসজ্জার প্রতীক। মা কালাটেশ্বরী এখানে মহাদেবের বুকে দাঁড়িয়ে, জিভ বার করে, নীলবর্ণা রূপে বিরাজমান।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এই মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ করেন স্থানীয় মুসলিম বালোচ আদিবাসীরা। তাঁরা শুধু দেখভালই করেন না, বরং কালীপূজা, দশহরা, হোলি, গুরুপূর্ণিমার মতো উৎসবেও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

পাকিস্তানে মৌলবাদী চাপের মধ্যেও এই মন্দির আজও অটুট। ২০১০ সালে মৌলবাদীরা অপহরণ করেছিল প্রধান পুরোহিত লক্ষীচাঁদ গড়জীকে, কিন্তু কয়েকদিন পরেই তাঁকে জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়।

স্থানীয় লোকগাথা বলে, যারা মন্দির ধ্বংসের চেষ্টা করেছে, তাদের অনেকেই অপঘাতে মারা গিয়েছেন। যদিও এটি নিছক রটনা কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক আছে।

এই মন্দির শুধু ধর্মীয় নয়, বরং বালোচিস্তানের সাংস্কৃতিক সহাবস্থানের প্রতীক। পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলিও জানে—এই মন্দির ভাঙলে শুধু হিন্দুরা নয়, মুসলিম বালোচরাও প্রতিবাদে ফেটে পড়বেন। এই মন্দির আজও বিস্মিত করে পর্যটকদের।

About The Author