কলকাতা: ২০২৩ সালে কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সির নজর এড়াতে নিজের ফোন পুকুরে ছুঁড়ে দিয়েছিলেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। এবারও সেই পুরনো কৌশলেই ভরসা রাখলেন তিনি। তবে অ্যাকশন রিপ্লেতে এল টুইস্ট—ফোন গিয়ে পড়ল পুকুরে নয়, পুকুর পাড়ে!
ইডি আধিকারিকরা যখন তাঁর বাড়িতে পৌঁছন, তখনই পাঁচিল টপকে পালানোর চেষ্টা করেন বিধায়ক। সঙ্গে সঙ্গে দু’টি ফোন ছুঁড়ে দেন পুকুরের দিকে। কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট! ফোন পড়ে যায় পাড়ে। প্রশ্ন উঠল—ফোন কোথায় গেল? কীভাবে জানল ইডি?
উত্তর লুকিয়ে ছিল বিধায়কেরই বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরায়। বাড়ির চারপাশে লাগানো নজরদারির সেই ক্যামেরাই হয়ে উঠল ‘কাল’। ফুটেজ খতিয়ে দেখে ইডি আধিকারিকরা বুঝে যান ফোন কোথায় পড়েছে। তারপরই উদ্ধার হয় সেই ফোন।
SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে ফের গ্রেফতার করল ইডি। মুর্শিদাবাদের আন্দিতে তাঁর বাড়ি থেকে ধাওয়া করে ধরা হয়। মোবাইল ছুড়ে পালানোর চেষ্টা, অসহযোগিতার অভিযোগ—তদন্তে ফের নাটকীয় মোড়।
সোমবার সকালেই মুর্শিদাবাদের আন্দি গ্রামে বিধায়কের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। পাঁচ সদস্যের তদন্তকারী দল, সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী—বাড়িতে ছিলেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। একইসঙ্গে তল্লাশি চলে রঘুনাথগঞ্জের পিয়ারাপুরে তাঁর শ্বশুরবাড়ি ও স্ত্রী টগর সাহার বাড়িতে।
সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে বিধায়কের বিরুদ্ধে। তাঁর নামে বেআইনি আর্থিক লেনদেন ও হিসাববহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগে নতুন করে চাপে পড়েছেন তিনি।
উল্লেখযোগ্য, ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল সিবিআই। সেবার বাড়িতে তল্লাশির সময় দুইটি মোবাইল ফোন পুকুরে ছুড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল। পরে সেই ফোন উদ্ধার করে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
১৩ মাস কারাবাসের পর সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান তিনি। এবার ফের গ্রেপ্তারি। আজই ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হতে পারে বিধায়ককে। নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে যখন রাজ্য রাজনীতি উত্তাল, তখন জীবনকৃষ্ণ সাহার গ্রেপ্তারি ঘিরে ফের তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল রাজনৈতিক মহলে।

