দাদার কাঁধে চেপে গ্রামে ঢুকল শহিদ ঝন্টু আলির দেহ, চোখের জলে ভাসল গোটা গ্রাম

নদিয়া: পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পাল্টা সেনা অভিযানে বৃহস্পতিবার উধমপুরে গুলির লড়াইয়ে শহিদ হন সেনার স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো তথা বাংলার ছেলে ঝণ্টু আলি শেখ। তিনি নদিয়ার তেহট্টের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর প্রয়াণের খবর এলাকায় পৌঁছোতেই কান্নার রোল পড়ে যায়। শনিবার শেষ হল অন্তিম কাজ।

কাশ্মীরে শহিদ ঝণ্টু আলি শেখের দাদা সফিকুলও রয়েছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে। শনিবার ঝন্টুর কফিনবন্দি দেহ সেই দাদার কাঁধে চেপেই ফিরল পাথরঘাটার বাড়িতে। শহিদ জওয়ানকে শেষ দেখা দেখতে সীমান্তের ওই গ্রামে তখন প্রচুর মানুষের ভিড়। ফুল ছিটিয়ে, চোখের জলে বীর ছেলেকে বিদায় জানালেন এলাকার মানুষজন। চোখের জল মুছে সদ্য স্বামীহারা স্ত্রী বললেন, ‘আমরাও মুসলিম। আমাদের নিয়ে অনেকের মনে বিদ্বেষ। তবে পাকিস্তানিরা ভারতীয় মুসলিম নয়। এর বদলা চাই। না হলে আরও বাচ্চা পিতৃহারা হবে!’

পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর হামলার পর উপত্যকাজুড়ে জঙ্গিদের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি শুরু হয়। গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে জম্মু ও কাশ্মীরের উধমপুর জেলায় জঙ্গিদের লুকিয়ে থাকার খবর পেয়ে অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। জওয়ানদের দেখে গুলি ছুড়তে থাকে জঙ্গিরা। পালটা জবাব দেয় বাহিনীও। দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলির লড়াই চলে।

সংঘর্ষে জওয়ান ঝণ্টু আলি শেখ গুরুতর আহত হন। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। জম্মুর মিলিটারি হাসপাতালে গান স্যালুটে কুর্নিশ জানানোর পর শুক্রবার রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে আনা হয় তাঁর কফিনবন্দি দেহ। রাতে ব্যারাকপুরের সেনা ছাউনিতে আনা হয় মরদেহ। এদিন সকালে সেখানে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়। এরপর তেহট্টর পাথরঘাটা গ্রামে পৌঁছায় কাশ্মীরে জঙ্গিদের সঙ্গে এনকাউন্টারে নিহত সেনার স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো ঝন্টু আলির কফিনবন্দি দেহ। দেড় বছর আগে কাশ্মীরে পোস্টিং হয় তাঁর। তাঁর আগে ছিলেন আগ্রায়। মাস খানেক আগে শেষবার গ্রামে এসেছিলেন ঝণ্টু। এদিন এল তাঁর কফিনবন্দি দেহ।

About The Author