ক্লাস চলাকালীন সহপাঠীর হাতে যৌন হেনস্থার শিকার নাবালিকা, জলপাইগুড়ির নামি স্কুলে একি কাণ্ড!

জলপাইগুড়ির এক বেসরকারি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী অভিযোগ করেছে, ক্লাসের মধ্যেই এক সহপাঠী তাকে যৌন হেনস্থা করেছে। ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে।

জলপাইগুড়ির একটি নামী বেসরকারি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে চলছিল ক্লাস। ২৩ জুন, শনিবার। দু’টি পিরিয়ডের মাঝখানে বিরতির সময়ে একটি ছাত্রী অভিযোগ করে, তার পিছনের বেঞ্চে বসে থাকা এক সহপাঠী তাকে যৌন হেনস্থা করেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ওই ছাত্র তার জামা ধরে টানাহেঁচড়া করে, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় স্পর্শ করার চেষ্টা করে এবং অশ্লীল ইঙ্গিতও করে। ওই সময় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে প্রতিবাদ জানায় ছাত্রীটি।

তবে প্রতিবাদ করায় আরও চাপে পড়ে যায় সে। অভিযোগ, অভিযুক্ত ছাত্র তখনই তাকে ভয় দেখায় এবং কাউকে কিছু জানালে ‘ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বলে হুমকি দেয়। আতঙ্কিত নাবালিকা বাড়িতে এসে পুরো ঘটনা জানায়।

পরিবার পরদিনই যোগাযোগ করে ছাত্রীটির ক্লাস শিক্ষিকার সঙ্গে। অভিযোগ, তখনই জানানো হয় অভিযুক্ত ছাত্র মানসিকভাবে স্থিতিশীল নয় এবং অতীতেও এমন আচরণ করেছে সে। এরপর অভিভাবকেরা উপস্থিত হন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে। অভিযোগ, সেখানেও তারা আশানুরূপ সাহায্য পাননি। উল্টে, এমন গুরুতর ঘটনার পর মাত্র দু-তিন দিন পরেই ছাত্রীকে আবার স্কুলে ফিরতে বলা হয়।

ছাত্রী ফিরে এলে শুরু হয় আরও মানসিক চাপে ফেলা—কিছু শিক্ষক ও সহপাঠীদের কাছ থেকে কটূ মন্তব্য শুনতে হয় তাকে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে পরিবার বাধ্য হয় আইনি পথে হাঁটতে। শনিবার, ৫ জুলাই, জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপারের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তারা। একইসঙ্গে তারা যোগাযোগ করে জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সঙ্গেও।

চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান মান্না মুখোপাধ্যায় জানান, অভিযোগ পেয়েই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবাহালে বলেন, “চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি তাদের মতো তদন্ত করছে, পাশাপাশি পুলিশও আলাদাভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।”

এই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে দায়িত্বশীল পদক্ষেপের বদলে, তাদের ব্যবহারে অভিভাবকদের আরও ক্ষুব্ধ করেছে বলে জানা গিয়েছে।

About The Author