জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তৃণমূলের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মঙ্গলবার ৩ তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। থানায় কৃষ্ণ দাস, প্রধান হেমব্রম সহ মোট ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাসকে ঘটনার মূল অভিযুক্ত হিসেবে দাবি করে তাঁর শাস্তির দাবি নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে দলের শ্রমিক সংগঠনের একটি অংশ।
মঙ্গলবার হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করতে যান বিধায়ক তথা জলপাইগুড়ি তৃণমূলের চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায়। ঘটনা প্রসঙ্গে প্রয়োজনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও যাবেন বলে জানিয়ে দিলেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে কৃষ্ণ দাস জানালেন, ‘আমি তো চাই, দল আমাকে নিয়ে আলোচনায় বসুক। মানুষ আমার সঙ্গে আছে।’ কৃষ্ণ দাসের তরফ থেকেও থানায় বেশ কয়েকজনের নামে অভিযোগ করা হয়েছে।
সোমবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শ্রমিক সংগঠন কার দখলে থাকবে সেই নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। কৃষ্ণ দাসের সংগঠন একদিকে, অন্যদিকে আইএনটিটিইউসির একাংশ। কৃষ্ণ দাসের দাবি, ৭ বছর ধরে হাসপাতালের সংগঠন করে এসেছি। এদিন আমাদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হল। মহিলাদের মারধর সহ পুরো ঘটনা দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।’
অন্যদিকে, আইএনটিটিইউসি নেতা পূন্যব্রত মিত্র বলেন, ‘সারা বাংলা নামে সংগঠন তৃণমুলের অনুমোদিত নয়। কৃষ্ণ দাস গায়ের জোরে সেই সংগঠন চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিন আমাদের কর্মীদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি নিয়ে হামলা চালিয়েছে। এদের শাস্তি চাই।’
মঙ্গলবার কলকাতা থেকে ফিরেই জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের দেখতে যান তিনি। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বর্তমানে ১ মহিলা সহ ৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার ৩ জনকে মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হয়। ঘটনায় জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় কৃষ্ণ দাস, প্রধান হেমব্রম সহ মোট ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
খগেশ্বরবাবু বলেন, ‘এরপরেও যদি কৃষ্ণ দাস গ্রেফতার না হন তবে প্রয়োজনে অভিষেক ব্যানার্জীর দারস্থ হব। পুরো বিষয়টি তাঁর নজরে আনা হয়েছে। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই অবস্থায় কোনওরকম দাদাগিরি বা অনৈতিক কাজ বরদাস্ত করা হবে না।’ দলের তরফে ইতিমধ্যেই উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে বলে খবর। এদিন, খগেশ্বর রায় বলেন, প্রয়োজনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃষ্ণ দাসের ব্যাপারে অভিযোগ জানাব। দল ব্যবস্থা নিক।
অভিষেক ব্যানার্জীকে অভিযোগ জানানোর প্রসঙ্গে কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘খগেশ্বর রায় যদি ওখানে অভিযোগ জানান তবে খুব ভালো হয়। আমি চাই দল আমাকে নিয়ে আলোচনায় বসুক। মিটিং হলে বিস্তারিত জানাব।’ কৃষ্ণ দাস আরও বলেন, ‘মানুষের সমর্থন আছে, ভয় করিনা।’
ঘটনা প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামী তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করেন। তাঁর কথায়, টাকা দেবে মোদী ভাই, লুট করবে দিদিভাই। এটা হতে পারেনা। কাটমানি কে খাবে, সেই নিয়ে গণ্ডগোল, মানুষের ভোগান্তি।’ সেই সঙ্গে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বাপি বাবুর বললেন, ‘প্রশাসন ঘুমাচ্ছে।’