ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যে নতুন টানাপোড়েন! ভারত সরকার বাংলাদেশের ৯টি নির্দিষ্ট পণ্যের উপর স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তৈরি হয়েছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও কূটনীতির নতুন সমীকরণ।
শুক্রবার ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য দফতরের তরফে জারি হওয়া নির্দেশনায় বলা হয়, কাঁচা পাট, পাটের সুতো ও রোল, বোনা ফ্লেক্স কাপড়সহ মোট ৯টি পণ্য স্থলপথে আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যদিও সমুদ্রপথে মুম্বইয়ের নভি সেবা বন্দর দিয়ে এসব পণ্য ঢুকতে কোনও বাধা নেই, যা নীতিগতভাবে স্থল ও নৌ পরিবহনের ভিন্ন আচরণকে স্পষ্ট করে।
এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য একটি বড় অর্থনৈতিক ধাক্কা হতে পারে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রায় ₹১,৬৪৫ কোটি টাকার এই পণ্য রপ্তানি হয়েছিল, যার ৯৯ শতাংশই স্থলবন্দর ব্যবহার করে হয়েছিল। স্থলপথে যোগাযোগ ও বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল বাংলাদেশের জন্য এমন নিষেধাজ্ঞা শুধু রাজস্ব নয়, রাজনৈতিক চাপও তৈরি করতে পারে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এটি বিচ্ছিন্ন সিদ্ধান্ত নয়। চলতি বছরের মে মাসে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক, ফলজাত পানীয়, প্লাস্টিক সামগ্রী, কাঠের আসবাবপত্রসহ বেশ কিছু পণ্যে আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ভারত। তারও আগে এপ্রিল মাসে বন্ধ করা হয় কলকাতা বিমানবন্দর হয়ে কিছু পণ্যের রফতানি। একের পর এক সিদ্ধান্তে প্রশ্ন উঠছে—এ কি নিছক ব্যবসায়িক নীতি, নাকি কূটনৈতিক বার্তা?
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এই পদক্ষেপ ‘সার্জিক্যাল ইকোনমিক রেসপন্স’ হিসেবেই বিবেচিত হতে পারে। একদিকে অভ্যন্তরীণ বাজার রক্ষা, অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশের উপর নির্দিষ্ট চাপ সৃষ্টি—এই দ্বৈত উদ্দেশ্যই সম্ভবত ভারতীয় নীতির পেছনে কাজ করছে।