বদদোরা: মোরবী সেতু বিপর্যয়ের তিন বছর পর গুজরাতে ফের ঘটল ভয়াবহ দুর্ঘটনা। বুধবার সকালে বডোদরার মহিসাগর নদীর উপর গম্ভীরা সেতুর একটি বড় অংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। মুহূর্তে নদীতে তলিয়ে যায় একাধিক গাড়ি। এখনও পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে, আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ১৯৮৫ সালে নির্মিত এই সেতু দীর্ঘদিন ধরেই রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। প্রতিদিন প্রচুর গাড়ি চলাচল করত এই সেতু দিয়ে—ভারী লরি থেকে শুরু করে ছোট গাড়ি। যানজট ছিল নিত্যদিনের সমস্যা। বহুবার প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
দুর্ঘটনার সময় সেতুর উপর ছিল চারটি গাড়ি—দু’টি লরি, একটি বোলেরো SUV এবং একটি পিকআপ ভ্যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে চারপাশ, তারপর একে একে গাড়িগুলি নদীতে পড়ে যায়। একটি তেলের ট্যাঙ্কার সেতুর কিনারায় দাঁড়িয়ে বরাতজোরে রক্ষা পায়।
উদ্ধারকাজে নেমেছে দমকল, পুলিশ, এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ডুবুরি নামিয়ে চলছে তল্লাশি। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল জানিয়েছেন, আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং উদ্ধারকাজে কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না। যদিও প্রশাসন এখনও দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ নিয়ে মুখ খোলেনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী হৃষীকেশ প্যাটেল দাবি করেছেন, প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছিল। তবে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শোকপ্রকাশ করে মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।
এই সেতু মধ্য গুজরাতের সঙ্গে সৌরাষ্ট্রের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। আনন্দ, বডোদরা, ভরুচ, অঙ্কলেশ্বরের বহু মানুষ প্রতিদিন এই সেতু ব্যবহার করতেন। স্থানীয়দের মতে, “এখন এই সেতু যেন ‘সুইসাইড পয়েন্ট’—নিত্যদিন দুর্ঘটনা, অথচ প্রশাসন নির্বিকার।”