কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, খরচের হিসাব না দিলে দুর্গাপুজো কমিটিগুলি সরকারি অনুদান পাবে না। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রশ্নে আদালতের কড়া অবস্থান।
কলকাতা: দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে সরকারি অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে এবার কড়া অবস্থান নিল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের নির্দেশ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খরচের হিসাব না দিলে কোনও কমিটিকে অনুদান দেওয়া যাবে না। বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, আদালতের পূর্ব নির্দেশ মেনে যাঁরা ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ জমা দিয়েছেন, তাঁরাই অনুদান পাওয়ার যোগ্য।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে জানান, ৪১,৭৯৯টি ক্লাবের মধ্যে মাত্র তিনটি ক্লাব হিসাব দেয়নি—তিনটিই শিলিগুড়ির। এই তথ্য শুনে বিচারপতি পালের মন্তব্য, “সংখ্যাটা এত কম যে মাইক্রোস্কোপ লাগবে।” তবে মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এই তথ্যের বিরোধিতা করেন। তাঁর দাবি, অনেক ক্লাব সময়মতো হিসাব দেয়নি, এবং কলকাতা পুলিশও তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
জনস্বার্থ মামলায় অভিযোগ ওঠে, জনগণের টাকা যথাযথ খাতে খরচ না করে বিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের যুক্তি ছিল, ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রচার এবং কোভিড পরিস্থিতিতে খরচের জন্যই অনুদান দেওয়া হয়। কিন্তু আদালত স্পষ্ট করে দেয়, অনুদানের অর্থের যথাযথ হিসাব দিতে হবে—তা না হলে অনুদান নয়।
এই রায় দুর্গাপুজো কমিটিগুলির কাছে এক স্পষ্ট বার্তা—উৎসবের আনন্দে সরকারি অনুদান মিললেও, তার পেছনে থাকতে হবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি। আদালতের এই পদক্ষেপ সরকারি অর্থ ব্যবহারে শৃঙ্খলা আনবে বলেই মনে করছেন অনেকেই।

