‘মুখ্যমন্ত্রী বললেও পরীক্ষা পিছোবে না’—রাজ্যবাসীর নজর কাড়লেন উপাচার্য শান্তা দত্ত

TMCP-এর প্রতিষ্ঠা দিবসে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ এসেছিল মুখ্যমন্ত্রীর নাম করেও। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে জানিয়ে দেন, বিধি ও স্বতন্ত্রতার প্রশ্নে তিনি পিছু হটবেন না।

কলকাতা: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নির্ধারিত সেমেস্টার পরীক্ষা ঘিরে তৈরি হয়েছিল রাজনৈতিক চাপ ও প্রশাসনিক টানাপড়েন।

জানা গেল, মুখ্যমন্ত্রীর নাম করে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ এসেছিল উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে প্রথম থেকেই অনড় ছিলেন—পরীক্ষা নির্ধারিত দিনেই হবে।

শান্তা জানান, এক রাতে ২৫ জন ছাত্র হঠাৎ এসে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু করেন, দাবি তোলেন পরীক্ষার দিন পরিবর্তনের। এমনকি তাঁরা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন।” পরে উচ্চশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিকও ফোন করে একই অনুরোধ জানান। শান্তা স্পষ্ট বলেন, “আজ যদি আমরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জন্য করি, অন্য রাজনৈতিক দলগুলি বাদ যাবে কেন?”

পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ নিয়ে সিন্ডিকেট বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি ওমপ্রকাশ মিশ্রও বলেন, “এটা মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ।” কিন্তু ভোটাভুটিতে অধিকাংশ সদস্য পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দেন। শান্তা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে অটোনমি থাকবে না? বিধি মেনেই চলার কথা।”

৩০,০০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রথমার্ধে ৯৬% এবং দ্বিতীয়ার্ধে ৯৫% উপস্থিতি ছিল। অধ্যক্ষদের আশঙ্কা সত্ত্বেও পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়। জয়ন্ত সিংহ, দেবাশিস দাস, এবং বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষরা জানান, পরীক্ষার দিন কিছুটা যাতায়াত সমস্যা হলেও সামগ্রিকভাবে পরীক্ষা সফল হয়েছে।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় যদিও একই দিনে পরীক্ষা বাতিল করে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তার অবস্থানে অনড় থেকে শিক্ষার মর্যাদা রক্ষা করেছে।

About The Author