ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতে কোভিড–১৯ সংক্রমণের হার তুঙ্গে উঠবে ২১ থেকে ২৮ জুনের মধ্যে। ওই সময় দিনে সাত থেকে সাড়ে সাত হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। তারপর, জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সংক্রমণের হার কমতে শুরু করবে। জানাচ্ছেন কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর ম্যাথেমেটিক্যাল বায়োলজি অ্যান্ড ইকোলজি’–র এক গবেষকদল। গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন প্রবীণ অধ্যাপক নন্দদুলাল বৈরাগী। তিনি আশ্বাস দিচ্ছেন, সাবধানতা মেনে চললে এবং নিয়মিত পরীক্ষা জারি থাকলে, অক্টোবরের মধ্যে সংক্রমণের হার ক্রমশ নিয়ন্ত্রণে আসবে। আর বাড়বে না।অধ্যাপক বৈরাগীর তত্ত্বাবধানে পঁাচ গবেষকের একটি দল ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে সংগৃহীত করোনা–তথ্য নিয়ে, আঙ্কিক সম্ভাবনার হিসাব–নিকাশ ও যান্ত্রিক মস্তিষ্কের অ্যালগারিদমের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ নিয়ে গবেষণা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। এই গাণিতিক নির্ণয়পদ্ধতি ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা পর্ষদের অনুমোদিত।
কীভাবে হয়েছে এই গবেষণার তথ্যসংগ্রহ? অধ্যাপক বৈরাগী জানাচ্ছেন, কোভিড–১৯ ভাইরাসের চরিত্রগত বিভিন্নতা অনুযায়ী, একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলকে ওঁরা সাত ভাগ করেছিলেন, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) নির্দেশিত সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণের ন্যূনতম পদ্ধতি মেনে চলা হয়েছে। ওই অঞ্চল থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করেই ওঁরা দেখছেন, গাণিতিক নিয়মে ভারতে করোনা সংক্রমণ শুরুর দিন থেকে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সংক্রামিতের সংখ্যা পঁাচ লাখ পর্যন্ত উঠতে পারে। কারণ, এমন বহু মানুষ এখন চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, যঁাদের শরীরে ভাইরাস আছে, কিন্তু উপসর্গ নেই। এরকম এক–একজন উপসর্গহীন লোক নিজের অজান্তেই আরও অন্তত দু–তিনজনকে সংক্রামিত করছেন। সেই কারণেই, যেখান থেকে করোনা প্রথম ছড়াতে শুরু করেছিল, চীনের সেই উহানে ৭৬ দিনের টানা লকডাউনে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও, ভারতে প্রায় দু মাস লকডাউন চলার পরেও সংক্রমণ বাড়ছে।কাজেই ভারতে লকডাউন জারি রেখেই অর্থনৈতিক কাজকর্ম চালু রাখার কথা ভাবতে হবে। যাতে সংক্রমণ কম ছড়ায়। যেহেতু করোনার এখনও কোনও চিকিৎসা বা প্রতিষেধক নেই, বলছেন যাদবপুরের গবেষকেরা। সেই কারণে গণপরিবহণ এড়িয়ে চলতেই হবে। কারণ এতে কে কার সংস্পর্শে আসছে, কার থেকে রোগ ছড়াচ্ছে, তা শনাক্ত করা সম্ভব নয়। র্যান্ডম টেস্টিংয়ের হারও বাড়াতে হবে। এবং গ্রিন আর অরেঞ্জ জোনে লকডাউন তুলতে হবে জুনের শেষ সপ্তাহে। রেড জোনে লকডাউন রাখতেই হবে। গ্রিন এবং অরেঞ্জ জোনেও কড়া নজর রাখতে হবে, যাতে ফের সংক্রমণ না ছড়ায়।