‘BJP-কে ভোট দিয়েছেন’, TMC বিধায়কের মন্তব্যে শোরগোল জেলার রাজনৈতিক মহলে

খগেশ্বর রায়ের বয়স ৭৫-র বয়স, এই বয়সে উনি কি বলতে কি বলে ফেলেছেন, বোঝেননি হয়ত, প্রতিক্রিয়া কৃষ্ণ দাসের।


জলপাইগুড়ি: প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার রাস্তা উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীকেই অকথ্য ভাষায় আক্রমণ রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়কের।

বেশিরভাগটাই সাংসদের তহবিলে তৈরি রাস্তা অথচ সাংসদকেই আমন্ত্রণ না করে কেন হচ্ছে অনুষ্ঠান, বিজেপির অভিযোগ শুনে মেজাজি জবাব দিতে গিয়ে বিধায়কের উত্তর, আমরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছি। জয়ন্ত রায় না বর্মণ, উনাকে সাংসদ বানিয়েছি। কিন্তু উনি কোনও কাজ করেননি; তাই ডাকা হয়নি। তৃণমূল বিধায়কের মুখে বিজেপিকে ভোট দিয়েছি শুনেই, বিজেমূল তত্ত্ব নিয়ে সরব বামেরা। এই নিয়েই জলপাইগুড়ির রাজনৈতিক মহলে শোরগোল। উঠল বিধায়কের বয়সের প্রসঙ্গ।

ঘটনার সূত্রপাত রাজগঞ্জের একটি রাস্তার উদ্বোধন করা নিয়ে। সুখানি অঞ্চলে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার ৬ কিলোমিটার পাকা রাস্তার উদ্বোধন করতে সপারিষদ হাজির হন তৃণমূলের বিধায়ক এবং এলাকার শাসক নেতারা। অথচ সেখানে সাংসদ প্রতিনিধি বা বিজেপির কোনও নেতার দেখা নেই। সেই নিয়েই প্রথমে সুর চড়ান রাজগঞ্জ ব্লক বিজেপির কনভেনার নিতাই মন্ডল।

মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী এবং সাংসদকে নিয়ে বিধায়কের কটু কথা শুনে, কেন্দ্রের তহবিলের প্রসঙ্গ তুলে পাল্টা বিধায়ককে ‘বেহায়া’ তকমা দেন তিনি। নিতাইবাবুর দাবি, সাংসদ জয়ন্ত রায়ের প্রস্তাবেই রাজগঞ্জের অন্তত ৪টি রাস্তা তৈরি হচ্ছে। অথচ সবগুলি অনুষ্ঠানেই এক তরফা ভাবে নিজেদের নাম চালিয়ে উদ্বোধন করে চলেছেন রাজগঞ্জে বিধায়ক। এটা চরম অভদ্রতা।

এই অভিযোগের ভিত্তিতেই রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ককে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কেন সাংসদকে আমন্ত্রণ করা হয়নি। উত্তরে বিধায়ক বলেন, আমরা বিজেপিকে ভোট দিয়ে উনাকে সাংসদ করেছি। কিন্তু উনাকে এলাকার কোন কাজে দেখা যায় না। এই যুক্তিতে সেদিন ওই অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে সাংসদ এবং প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছিলেন তিনি।

এদিকে বিধায়কের মুখ থেকে বিজেপিকে ভোট দেওয়া মন্তব্য শুনে রাজগঞ্জের সিপিএম নেতা রতন কুমার রায় বলেন, ‘আমরা তো আগে থেকেই বলেছিলাম, কেন্দ্রে বিজেপি ও রাজ্যে তৃণমূল; দুই দলের মধ্যে সেটিং চলছে। বিধায়কের মুখ থেকে সে কথাই হয়ত ফসকে বেরিয়ে গেল।’

বিধায়কের ‘বিজেপিকে ভোট দেওয়া’ মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলের আরেক নেতা কৃষ্ণ দাস, যিনি খগেশ্বর রায়ের ‘ঘোর সমালোচক’ বলেও পরিচিত, বলেন, ‘৭৫ বছর বয়স হয়েছে লোকটার। হয়ত ভুল করে বলে ফেলেছে। আরও বেশি সতর্ক হয়ে মন্তব্য করা উচিৎ ছিল।’

এদিকে সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, শাসকদলের আমলে এরাজ্যে দীর্ঘদিন ধরেই তীব্র অসৌজন্যতার রাজনীতি চলছে। আশা করি, জনগণ আগামীতে এর যোগ্য জবাব দেবে। খগেশ্বরের এই মন্তব্যের পর বিজেপির জেলা সম্পাদক শ্যাম প্রসাদ বলেন, ‘খগেশ্বর রায় ২০ টাকার পাউচ খান। উনি সকালে একরকম কথা বলেন। আবার টলমল পায়ে রাতে অন্য কথা বলেন। তাই ওঁর কথার কোনও গুরুত্ব নেই।’

About The Author